CESC

শুধু জুনের বিলই দিতে হবে সিইএসসি গ্রাহকদের, বকেয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত স্থগিত

১৯ জুলাই সিইএসসি জানায়, এপ্রিল-মে মাসের অনাদায়ী বিলের অংশ তারা এখন নেবে না। শুধু জুনের টাকাই নেওয়া হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২০ ২০:৫৩
Share:

অস্বাভাবিক বিল নিয়ে সিইএসসি-র বিরুদ্ধে ক্ষোভ। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

জুন মাসের সংশোধিত বিল এ বার পাঠাবে সিইএসসি। এর আগে জুনের যে বিল পাঠানো হয়েছিল, তা অস্বাভাবিক চড়া হওয়ায় গ্রাহকদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল। সর্বত্র প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। কিন্তু সংশোধিত বিলে আপাতত স্বস্তি মিলবে গ্রাহকদের। বুধবার এমনটাই দাবি করলেন সিইএসসি কর্তৃপক্ষ। চলতি সপ্তাহেই নতুন করে জুন মাসের বিদ্যুতের বিল পাবেন গ্রাহকেরা। এ ক্ষেত্রে শুধু জুন মাসেরই বিদ্যুৎ বিলের টাকা দিতে হবে। পুরনো বিলে জুড়ে দেওয়া অনাদায়ী পাওনা আপাতত দিতে হবে না বলেই জানিয়েছেন সিইএসসি কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

বিদ্যুতের বিল নিয়ে প্রবল বিক্ষোভ-প্রতিরোধের মুখে পিছু হঠতে হয়েছিল সিইএসসিকে। সংশোধিত বিল না পাঠানো পর্যন্ত কেউ টাকা দেবেন না, রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় গ্রাহকদের উদ্দেশে এমন বার্তাই দিয়েয়েছিলেন। তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগী হন। শেষে সিইএসসি কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন। তার পর ১৯ জুলাই সিইএসসি জানায়, এপ্রিল-মে মাসের অনাদায়ী বিলের অংশ তারা এখন নেবে না। শুধু জুনের টাকাই নেওয়া হবে।

কোন পদ্ধতিতে জুন মাসের বিল পাঠানো হচ্ছে?

Advertisement

সিইএসসির ব্যাখ্যা, লকডাউনের আগে কোনও গ্রাহকের মার্চ মাসে ডোমেস্টিক মিটারের রিডিং ছিল ১০০০ ইউনিট। লকডাউনের কারণে মিটার রিডিং নেওয়া যায়নি। জুন মাসে যখন রিডিং নেওয়া হল, তখন দেখা গেল মিটারে ২০০০ ইউনিট দেখাচ্ছে। অর্থাৎ গত চার মাসে ১০০০ ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ করেছেন গ্রাহক। মোট ইউনিটকে চার মাসে ভাগ করলে প্রতি মাসে ২৫০ ইউনিট খরচ হয়েছে। মার্চ, এপ্রিল, মে, জুন— প্রতি মাসে ২৫০ ইউনিট করে বিদ্যুতের বিল হয়। এ ক্ষেত্রে গ্রাহককে শুধু জুন মাসের ২৫০ ইউনিট দিতে হবে। বাকি তিন মাসের ৭৫০ ইউনিট পড়ে থাকছে। সিইএসসি কর্তৃপক্ষ মিটার রিডিং না নিলেও ওই তিন মাসের বিদ্যুতের বিলের টাকা জমা দিয়েছেন গ্রাহকেরা। ধরা যাক প্রতি মাসে ১০০ ইউনিট করে বিদ্যুতের বিলের দাম দিয়েছেন। অর্থাৎ মার্চ, এপ্রিল এবং মে মাসে মোট ৩০০ ইউনিট বিদ্যুতের বিল দিয়েছেন গ্রাহক। সিইএসসি অনাদায়ী ৭৫০ থেকে ৩০০ ইউনিট বাদ দিচ্ছে। যে হেতু ওই তিন মাস ১০০ ইউনিট করে টাকা আগেই দিয়েছেন গ্রাহক। অর্থাৎ পড়ে থাকছে ৪৫০ ইউনিট। সিইএসসি জানাচ্ছে, গ্রাহককে ৪৫০ এবং ২৫০ ইউনিটের টাকা দিতে হত। কিন্তু প্রতিশ্রুতি মতো শুধু ২৫০ ইউনিটেরই টাকা নেওয়া হবে। বাকি থাকা ৪৫০ ইউনিটের টাকা আপাতত নেওয়া হচ্ছে না। পরবর্তী ক্ষেত্রে বিদ্যুতের বিলের সঙ্গে যুক্ত হবে না কি মুকুব করা হবে, সে বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

আরও পড়ুন: বাবার দেহ আগলে মেয়ে, সরশুনায় রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া​

যাঁরা ইতিমধ্যেই টাকা দিয়ে দিয়েছেন তাঁরা কী করবেন? সংশোধন করে পাঠানো বিলে ৪৫০ ইউনিটের টাকা জুড়ছে না। কিন্তু, যাঁরা ওই হিসাবে ৪৫০ ইউনিটের টাকা ইতিমধ্যেই দিয়েছেন, পরবর্তী ক্ষেত্রে বিলের সঙ্গে ওই ইউনিট ‘অ্যাডজাস্ট’ হবে। তবে কোন মাসে, কত বারে ‘অ্যাডজাস্ট’ হবে, সে বিষয়ও নির্দিষ্ট ভাবে সিইএসসি কিছু জানায়নি।

সিইএসসি-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিস্ট্রিবিউশন) দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “গ্রাহকদের স্বার্থের কথা ভেবে সংশোধন করে বিল পাঠানো হচ্ছে। যে অনাদায়ী অংশের বিল যুক্ত হয়েছিল আগে, আপাতত তা দিতে হচ্ছে না। জুন মাসের বিলই দিতে হবে। সবিস্তার ব্যাখ্যা বিল এবং তাঁর সঙ্গে পাঠানো একটি চিঠিতে দেওয়া থাকবে।”

আরও পড়ুন: সমবায় ব্যাঙ্কের তহবিল তছরুপ মামলায় অর্জুনের বাড়িতে তল্লাশি, করা হবে জেরাও

সিইএসসি কর্তৃপক্ষের দাবি, করোনার সময়ে যে ভাবে সিইএসসি গ্রাহকদের স্বার্থের কথা ভাবছে, অন্যান্য শহরের বিদ্যুৎ গ্রাহকেরা তেমন সুবিধা পাচ্ছেন না। তাঁদের পুরো টাকাই দিতে হচ্ছে। কিন্তু সিইএসসির গ্রাহকদের অসুবিধার কথা ভেবে স্বচ্ছ ভাবে নতুন করে বিল পাঠানো হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের নির্দেশিকা মেনে লকডাউনের সময় ছ’মাসের গড় বিল করেছিল সিইএসসি। যদিও আপৎকালীন পরিস্থিতিতে দু’টি পদ্ধতিতে বিল করার বিধি রয়েছে। এক, যে মাসের রিডিং নেওয়া যাচ্ছে না, তার আগের ছ’মাসের গড় বিল করা যায়। আর একটি পদ্ধতি হল, তার আগের বছরের ওই একই মাসের রিডিং অনুযায়ী। সিইএসসি-র দাবি, লকডাউনের সময় মানুষের আর্থিক অবস্থার কথা ভেবেই গড় বিল করা হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement