প্রতীকী ছবি।
শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এ বার প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত টেট (টিচার্স এলিজিবিলিটি টেস্ট) বাধ্যতামূলক করার পরিকল্পনা করছে ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার্স এডুকেশন’। এটি কেন্দ্রীয় শিক্ষা দফতরের অধীনে। এত দিন রাজ্যে শুধুমাত্র প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষকদের জন্য টেট বাধ্যতামূলক ছিল। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির টেট নিত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির জন্য টেট নিত স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে টেট ছিল না। এসএসসি-ই তাঁদের বিষয় ভিত্তিক পরীক্ষা নিত।
সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার্স এডুকেশন জানিয়েছে, প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত টেট কীভাবে হবে তা নিয়ে নির্দেশিকা তৈরি করা হচ্ছে। এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কোনও সুপারিশ থাকলে তা ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মেল করে পাঠাতে হবে বলে জানিয়েছে তারা। কাউন্সিল জানিয়েছে, ৩১ মার্চের মধ্যে পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ –এর নির্দেশিকা অনুযায়ীই এই দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত টেট বাধ্যতামূলক করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে কাউন্সিল। এই শিক্ষানীতিতে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা থেকে শুরু করে শিক্ষাদান কেমন হবে, তা নিয়ে নানা পরিবর্তনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
প্রশ্ন উঠেছে, এ বার নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত যদি টেট বাধ্যতামূলক হয়, তা হলে কি চাকরিপ্রার্থীদের টেটের সঙ্গে বিষয়ভিত্তিক পরীক্ষা দিতে হবে? নাকি শুধু টেট পাশ করলেই হবে? এই নিয়ে অবশ্য এখনও স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
এত দিন পর্যন্ত প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকের টেট নিত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এবং স্কুল সার্ভিস কমিশন। এই দু’টিই রাজ্য সরকার অনুমোদিত স্বশাসিত সংস্থা। প্রশ্ন উঠেছে, এ বার যে প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত টেট হবে সেটা কি রাজ্য সরকারের স্বশাসিত সংস্থা নেবে, নাকি পরীক্ষার প্রশ্ন থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়া পুরোটাই কেন্দ্রের হাতে চলে যাবে? সেই নিয়েও উত্তর ওই বিজ্ঞপ্তিতে নেই। শিক্ষকদের একাংশের মতে, এতদিন রাজ্যের আয়োজিত টেট প্রশ্নে রাজ্যের নানা বিষয় নিয়ে প্রশ্ন থাকত। কেন্দ্রীয়ভাবে টেট হলে তা কতটা বজায় থাকবে, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। কয়েকজন শিক্ষকের মতে, পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের কোনও টেট পরীক্ষার্থীর হিমাচল প্রদেশের কোনও জেলার ভৌগলিক গঠন, তাদের জীবনযাত্রা নিয়ে ভাল ধারণা না-ই থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয়ভাবে টেট প্রশ্ন হলে অনেক পরীক্ষার্থীরই অসুবিধা হবে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।