TMC

প্রকল্পে ‘নাম কেনা’ নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য চাপানউতোর

প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের ধারণা, এই দু’টি প্রকল্পের মাধ্যমে বেশির ভাগ মানুষের কাছে পৌঁছনো সম্ভব বলেই এ নিয়ে বেশি দড়ি টানাটানি চলছে।

Advertisement

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২০ ০৪:১৪
Share:

ছবি সংগৃহীত

কেন্দ্রের অভিযোগ, তাদের একাধিক প্রকল্পের সুবিধা না নিয়ে নাগরিকদের বঞ্চিত করছে রাজ্য। রাজ্যের যুক্তি, আরও সুবিধাযুক্ত প্রকল্প হাতে থাকায় কেন্দ্রীয় প্রকল্পের প্রয়োজন নেই। ফলে নিজের খরচে প্রায় একই ধরনের প্রকল্প চালাতে হচ্ছে রাজ্যকে। তবে প্রকল্প নিয়ে ‘ওদের-আমাদের’ তরজা রাজ্যের কোষাগারের উপরে বাড়তি চাপ তৈরি করছে কি না, তা নিয়ে চর্চা রয়েছে প্রশাসনের অন্দরে।

Advertisement

আয়ুষ্মান ভারত, পিএম কিসানের মতো প্রকল্পগুলি নিয়েই কেন্দ্র-রাজ্য তরজা চরমে। প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের ধারণা, এই দু’টি প্রকল্পের মাধ্যমে বেশির ভাগ মানুষের কাছে পৌঁছনো সম্ভব বলেই এ নিয়ে বেশি দড়ি টানাটানি চলছে।

আধিকারিকদের একাংশের দাবি, আয়ুষ্মানের সুবিধা নিলে রাজ্যের প্রায় দেড় কোটি পরিবার বছরে পাঁচ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যবিমা পেত। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পেও বছরে পাঁচ লক্ষ টাকা স্বাস্থ্যবিমার সুবিধা রয়েছে। কেন্দ্র আয়ুষ্মান প্রকল্পের ৬০ ভাগ খরচ বহন করে। ফলে রাজ্যকে দিতে হত ৪০ ভাগ টাকা। স্বাস্থ্যসাথীর জন্য বছরে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করে রাজ্য। কিছু আধিকারিকের মতে, স্বাস্থ্যসাথীতে তুলনায় অনেক বেশি মানুষকে সুবিধা দেওয়া যাচ্ছে। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এখন প্রায় সাড়ে সাত কোটি মানুষ সুবিধা পাচ্ছেন। আয়ুষ্মানে ৪০ শতাংশ খরচ দিলেও বেশি মানুষ সুবিধা পেতেন না।’’

Advertisement

কেন্দ্রের দাবি, পিএম কিসান প্রকল্পে সাড়ে আট কোটি কৃষক বার্ষিক ছ’হাজার টাকা করে অর্থসাহায্য পান। রাজ্যের কৃষকবন্ধু প্রকল্পে তা পাঁচ হাজার টাকা হলেও কৃষকের মৃত্যু হলে পরিবার দু’লক্ষ টাকা পায়। ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ৪১ লক্ষেরও বেশি কৃষকের জন্য প্রায় ১১০০ কোটি টাকা খরচ করেছে রাজ্য। এক কর্তা বলেন, ‘‘খরচ বেশি হলেও রাজ্যের প্রকল্পে সুবিধা বেশি। কারণ, রাজ্যের প্রকল্পে জমির পরিমাপ বিচার্য নয়।’’ পিএম ফসল বিমা যোজনার বদলে ‘বাংলা ফসল বিমা যোজনা’ হয়েছে। কৃষি কর্তাদের যুক্তি, কেন্দ্রের প্রকল্পে জটিলতার কারণে চাষিরা সমস্যায় পড়তেন। প্রায় ৪৬ লক্ষ কৃষকের প্রিমিয়াম বাবদ প্রায় ৭০০ কোটি টাকা খরচ করে রাজ্য। কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘‘কৃষক-স্বার্থের সঙ্গে সমঝোতা রাজ্য করে না।’’ কিছু কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নামও বদল করেছে রাজ্য। স্বচ্ছ ভারত মিশনের নাম মিশন নির্মল বাংলা, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা হয়েছে বাংলার গ্রামীণ সড়ক যোজনা, ন্যাশনাল রুরাল লাইভলিহুড মিশন হয়েছে দ্য স্টেট রুরাল লাইভলিহুড মিশন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (গ্রামীণ) নাম হয়েছে বাংলার গৃহ প্রকল্প। সরকারের যুক্তি, খরচের একাংশ দেওয়ায় যদি কেন্দ্রের নামে প্রকল্প হয়, তা হলে বাকি খরচ দেওয়ার কারণে প্রকল্পের নাম ঠিক করতে পারে রাজ্য।

তবে প্রবীণ আমলাদের একাংশ জানাচ্ছেন, ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে আনুমানিক ৬ হাজার ১৭১ কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতির ইঙ্গিত দিয়েছে রাজ্য। রাজকোষ ঘাটতিরও ইঙ্গিত রয়েছে প্রায় ৩৪ হাজার ১১৬ কোটি টাকা। আয় কমে যাওয়ায় প্রকল্প নির্বাচনে আরও কৌশল প্রয়োজন।

আরও পড়ুন: মেডিক্যালে ‘তালা’ খুলতে আন্দোলন

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement