চলছে রাস্তার গুণমান পরীক্ষা। করিমপুরে। নিজস্ব চিত্র।
এ বার রাস্তার মান দেখে ‘বিরক্ত’ হলেন ১০০ দিনের প্রকল্প ও আবাস যোজনার কাজের ‘ন্যাশনাল লেভেল মনিটরিং’ দলের সদস্যেরা।
নদিয়ার করিমপুর ২ ব্লকের নারায়ণপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে বৃহস্পতিবার যান দুই কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক। সেখানে নথিপত্র দেখার পরে, তাঁরা রাস্তাঘাটের হাল দেখতে বেরোন। ফাজিলনগর এলাকায় গিয়ে কাঠি ও ইট দিয়ে খুঁচিয়ে কয়েকটি রাস্তার গুণমান পরীক্ষা করছিলেন তাঁরা। তখনই একটি রাস্তার সিমেন্ট-বালি উঠে এলে, বিরক্তি প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকেরা। ওই রাস্তা আর মাপজোক না করে তাঁরা এলাকা ছেড়ে চলে যান। উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি ২ ব্লকের চিমটাপাড়া, মিঠাখালি, জয়গোপালপুর, বেড়মজুর এলাকাতেও রাস্তার কাজে নজর ছিল পর্যবেক্ষকদের।
‘অসন্তোষের কারণ’ কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকেরা পেয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের যবগ্রামেও। সেখানে তাঁরা দৃশ্যত বিরক্ত হন ১০০ দিনের প্রকল্পে ক্যানালের পাড় বাঁধানোর কাজের ‘ডিসপ্লে বোর্ড’ দেখতে না পেয়ে। পঞ্চায়েতের কর্মীদের কাছে ওই বোর্ড কোথায় গেল, জানতে চান তাঁরা। সংশ্লিষ্ট ক্ষীরগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বাবু সামন্ত দাবি করেন, ‘‘বোর্ড ছিল। রাখাল ছেলেরা হয়তো কোথাও সরিয়ে দিয়েছে।’’
পক্ষান্তরে, উপভোক্তাদের ‘ক্ষোভের’ কথা পর্যবেক্ষকেরা জানতে পেরেছেন ক্ষীরগ্রাম এলাকায়। যবগ্রাম, ধারসোনা গ্রামে গিয়ে আবাস যোজনা প্রকল্পের উপভোক্তা প্রবীর চক্রবর্তী, সুরজ শেখ, সামাদ মল্লিকদের কাছে তাঁরা কত টাকা পেয়েছেন, কী ভাবে পেয়েছেন, টাকা পেতে হয়রান হতে হয়েছিল কি না, তা জানতে চান পর্যবেক্ষকেরা। উপভোক্তাদের দাবি, ধাপে ধাপে টাকা পেলেও, নিজের বাড়ি তৈরির জন্য শ্রম দেওয়া বাবদ ৩০ দিনের মজুরির টাকা পাননি তাঁরা। পর্যবেক্ষকেরা সে কথা ‘নোট’ করে নেন। প্রধানের দাবি, যেমন টাকা এসেছে, তেমন উপভোক্তাদের দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
বীরভূমের মাড়গ্রাম মোল্লাপাড়ায় চিনি শেখ নামে এক উপভোক্তার বাড়িতে টিনের ছাউনি দেখে ছাদ হয়নি কেন, পর্যবেক্ষকেরা জানতে চান পঞ্চায়েতের কর্মীদের কাছে। নির্মাণ সহায়ক আব্দুল হাসনাথ দাবি করেন, উপভোক্তা টাকায় কুলিয়ে উঠতে পারেননি। পরে, ওই উপভোক্তাকে জব-কার্ড নিয়ে পঞ্চায়েতে দেখা করতে বলা হয়েছে।
উত্তরবঙ্গে কোচবিহারের চিলাখানা, আলিপুরদুয়ারের কালচিনি, উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি, গোয়ালপোখর, জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ি এবং রাজগঞ্জ, হুগলির ধনেখালি, মুর্শিদাবাদের খড়গ্রাম, বাঁকুড়ার ইন্দাস এবং পুরুলিয়ার ঝালদাতেও কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকেরা ঘুরেছেন এ দিন।