কেন্দ্রীয় সংসদীয় বিষয়ক ও সংস্কৃতি দফতরের প্রতিমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল। ছবি সংগৃহীত।
মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়া নিয়ে রাজনৈতিক তরজা নতুন নয়। পঞ্চায়েত ভোটের আগে ফের একবার সেই তত্ত্ব তুলে ধরলেন কেন্দ্রীয় সংসদীয় বিষয়ক ও সংস্কৃতি দফতরের প্রতিমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল। রাস উৎসব উপলক্ষে সোমবার তিনি গাইঘাটার মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে এসেছিলেন। তাঁকে স্বাগত জানান আর এক কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী, বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর।
এদিন অর্জুন বলেন, ‘‘কেন্দ্রের মনোভাব স্পষ্ট, মতুয়াদের নিশ্চিত ভাবেই নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কিছু সময় লাগতে পারে টেকনিক্যাল কারণে।’’ তিনি বলেন, ‘‘ভারত সরকার আইন করেছে। নাগরিকত্ব প্কোন রাজ্যে কী ভাবে দেওয়া হবে তা আমরা দেখছি।’’
গুজরাতে বিধানসভা ভোটের আগে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে ওই রাজ্যের দুটি জেলায় নাগরিকত্ব দেওয়ার কাজ শুরু হচ্ছে। এ রাজ্যের মতুয়ারা নাগরিকত্বের দাবিতে অনেক বছর ধরে আন্দোলন করে আসছেন। এখনও নাগরিকত্ব দেওয়ার কাজ শুরু না হওয়ায় মতুয়াদের একাংশ ক্ষুব্ধ। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, তাঁদের ক্ষোভের কথা মাথায় রেখেই এ দিন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন।
তবে গুজরাতে ২০১৯ সালের সিটিজেন অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট ২০১৯ (সিএএ) এর বদলে সিটিজেনশিপ অ্যাক্ট, ১৯৫৫ অনুযায়ী নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন অনেকেই।
সিএএ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘যাঁরা ভোট দিয়ে সাংসদ-বিধায়ক নির্বাচিত করেন, তাঁরা সকলেই নাগরিক। তাঁদের ভোটে আমরা নির্বাচিত হলাম। তাঁরা কী করে অনুপ্রবেশকারী হবেন! তা হলে তো সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের জয়ও অবৈধ। পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিজেপি ফের মতুয়াদের ভাঁওতা দিতে আসরে নেমে পড়েছে। মতুয়ারা ভোটবাক্সে এর জবাব দেবেন।’’
এ বিষয়ে শান্তনু ঠাকুর বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে সিএএ প্রয়োগ হবেই। সংবিধানকে কেউ উপেক্ষা করতে পারে না। মুখ্যমন্ত্রী একটি সম্প্রদায়ের ভোটের দখল রাখতে এ রাজ্যে সিএএ-এর বিরোধিতা করছেন।’’
বনগাঁ প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুর বলেন, ‘‘২০১৯ সাল থেকে শুনছি মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। যখনই কেন্দ্রের কোনও মন্ত্রী ঠাকুরবাড়িতে আসেন, একই কথা বলেন। কিন্তু কবে তা দেওয়া হবে, সেটাই তো বুঝতে পারছি না।’’