Central Government

Price Hike: তেমন বেশি কই! আগুন দর মানতেই নারাজ দিল্লি

দামের ছেঁকায় হেঁশেল সামলাতে নাজেহাল আম গৃহস্থ। তা ঘিরে তৈরি হওয়া ক্ষোভ চিন্তায় ফেলেছে কেন্দ্রকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২১ ০৬:৩৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

দাপটে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকানো সর্ষের তেল থেকে সেঞ্চুরিমুখী টোম্যাটো। অগ্নিমূল্য পেঁয়াজ থেকে শুরু করে অধিকাংশ আনাজ, এমনকি ডালও। দামের ছেঁকায় হেঁশেল সামলাতে নাজেহাল আম গৃহস্থ। তা ঘিরে তৈরি হওয়া ক্ষোভ চিন্তায় ফেলেছে কেন্দ্রকে। কিন্তু অন্তত মুখে ওই চড়া দরের সমস্যার কথা স্বীকার করতে নারাজ মোদী সরকার। শুক্রবারও তাদের দাবি, পেঁয়াজের দাম তেমন ‘অস্বাভাবিক’ রকম বাড়েনি। সঙ্গে আশ্বাস, সর্ষের তেল ও ডালের দাম ক্রমশ কমে আসবে। কিন্তু তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত! সর্ষের তেল-সহ বিভিন্ন ভোজ্য তেলের দাম দেশে বাড়লেও, তা এখনও বিশ্ব বাজারের তুলনায় কম বলেই মোদী সরকারের দাবি।

Advertisement

অবশ্য মুখে এ কথা বললেও, উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে ভোটের ঢাকে কাঠি পড়ে যাওয়ার পরে খাদ্যপণ্যের চড়া দামে যে কেন্দ্র অস্বস্তিতে, তা তাদের পদক্ষেপে স্পষ্ট। আজ ফের মোদী সরকার সমস্ত রাজ্যকে চিঠি পাঠিয়ে ভোজ্য তেলের মজুতদারিতে রাশ টানার নির্দেশ দিয়েছে। সর্ষের তেল ও অন্যান্য ভোজ্য তেলের দাম নিয়ে সোমবার রাজ্যগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছে খাদ্য মন্ত্রক। ওই মন্ত্রকের যুগ্মসচিব নন্দিতা গুপ্ত সমস্ত রাজ্যের খাদ্য দফতরের সচিবদের চিঠি লিখে এ কথা জানিয়েছেন।

বিরোধীরা প্রায় নিয়মিত কেন্দ্রকে মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, পেট্রল-ডিজ়েলের দাম সেঞ্চুরি করে ফেলার সঙ্গে সঙ্গে সর্ষের তেল-সহ বিভিন্ন ভোজ্য তেলের দরও ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে। পেঁয়াজের দাম

Advertisement

হাফ সেঞ্চুরি (প্রতি কিলোগ্রাম ৫০ টাকা) পার। তার সঙ্গে এ বার ডালের দরও বাড়তে শুরু করেছে।

প্রতি সপ্তাহে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের কর্তাদের বৈঠক বসছে। রাজ্যগুলির সঙ্গেও নিয়মিত বৈঠক হচ্ছে। কিন্তু বাজারে দাম কমার বিশেষ লক্ষণ নেই।

বরং সামনে দীপাবলির মরসুমে পেঁয়াজ, ডাল, থেকে সর্ষের তেল— সবেরই দাম ফের বৃদ্ধির আশঙ্কা। বিরোধীরা বলছেন, দরের ছেঁকায় ভোজ্য তেল, পেঁয়াজ, আনাজ কোনও কিছুই ছোঁয়া দায়। তার উপরে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার হাজার

টাকা ছুঁইছুঁই। সাধারণ মানুষ তা হলে খাবেন কী?

এর মধ্যে আজ কেন্দ্রীয় খাদ্যসচিব সুধাংশু পাণ্ডে বলেন, ‘‘বাজারে পেঁয়াজের দাম তেমন অস্বাভাবিক বেশি নয়।’’ তাই এখনই বিদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করার কথা ভাবছে না সরকার। পাণ্ডের দাবি, শুক্রবার দেশে পেঁয়াজের গড় দাম ছিল প্রতি কিলোগ্রাম ৪১.৫০ টাকা। গত বছর এই সময়ে তা ৫৫ টাকা ছিল। খাদ্যসচিব এই দাবি করলেও, শুক্রবারের সরকারি তথ্যই বলছে, এ দিন কলকাতায় প্রতি কিলোগ্রাম পেঁয়াজ ৫৭ টাকা দরে বিকিয়েছে! দিল্লিতে ৪৮ টাকা। কেন্দ্রের দাবি, পেঁয়াজের দাম এখন আর অস্বাভাবিক রকম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা নেই। কারণ খরিফ মরসুমে গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হবে বলে তাদের ধারণা।

কিন্তু কবে নতুন ফসল আসবে, তবে পেঁয়াজের দাম কমবে?

এই প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রের যুক্তি, বাজারে দাম কমাতে সরকারি স্তরে ২৬ টাকা কিলোগ্রাম দরে পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে। রাজ্যগুলিকেও একই দরে কেন্দ্রের কাছ থেকে পেঁয়াজ কিনতে বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার প্রায় দু’লক্ষ টন পেঁয়াজ মজুত করেছিল। বাজারে সস্তায় পেঁয়াজ ছাড়ার পরেও এখনও প্রায় এক লক্ষ টন মজুত রয়েছে। যদিও প্রশ্ন, তাতে এত দিন দামে সুরাহা মিলল কোথায়?

সর্ষের তেলের আগুন দাম নিয়ে কেন্দ্রের দাবি, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় শ্রমিক-সঙ্কটের ফলে পাম তেল উৎপাদন কম হয়েছে। সেই কারণেই বিশ্ব জুড়ে ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে। তার প্রভাব পড়ছে এ দেশে। বিশেষত জ্বালানি তেলের (পেট্রল, ডিজ়েল) মতো ভোজ্য তেলেও ভারত অনেকাংশে আমদানি নির্ভর। তাই বিশ্ব বাজারে দর বৃদ্ধির সরাসরি প্রভাব পড়ছে এ দেশে।

কিন্তু যে সর্ষের তেলের ভারতীয় উপমহাদেশের বাইরে বাকি বিশ্বে আর কোথাও তেমন চাহিদা নেই, তার দাম বাড়ছে কেন?

খাদ্যসচিবের জবাব, ভোজ্য তেলের মধ্যে পাম তেলই প্রধান। তাই তার দাম বাড়লে, সব রকম তেলের দাম বাড়ে। তবে একই সঙ্গে তাঁর দাবি, এ বার সর্ষের উৎপাদন ১০ লক্ষ টন বেড়েছে। তার প্রভাব কয়েক মাসের মধ্যেই দেখা যাবে। আজ রাজ্যগুলিকে চিঠিতে কেন্দ্র নির্দেশ দিয়েছে, তারা নিজেদের মতো করে ব্যবসায়ীদের কাছে ভোজ্য তেল মজুত করার ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দিক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement