ফাইল চিত্র।
দুর্গাপুর ও বার্নপুর সেল-এর ইস্পাত কারখানায় লৌহ আকরিকের কোনও অভাব হবে না বলে দাবি করলেন কেন্দ্রীয় ইস্পাতমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান।
বুধবারই এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র কেন্দ্রের ইস্পাতমন্ত্রীকে কড়া চিঠি পাঠিয়েছিলেন। সেল-এর কাঁচামাল সরবরাহ বিভাগ বা আরএমডি গুটিয়ে ফেলার পরিকল্পনা নিয়েছে। এই বিভাগের সদর দফতর কলকাতাতেই ছিল। অমিত মিত্র ইস্পাতমন্ত্রীকে চিঠি লিখে অভিযোগ তুলেছিলেন, দুর্গাপুরের স্টিল প্ল্যান্ট ও বার্নপুরের ইসকো-র হাতে নিজস্ব লৌহ আকরিকের খনি না থাকলে, বাজার থেকে অনেক বেশি দামে লোহা কিনতে গিয়ে দুই সংস্থা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে গিয়ে লোকসানের মুখে পড়বে। সংস্থার কর্মীদের ভবিষ্যৎ নিয়েও তিনি প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন। অমিতের প্রশ্ন ছিল, বিজেপি বাংলার ভোটে হেরে গিয়েই কি রাজ্যের স্বার্থবিরোধী এই রকম নীতি নিচ্ছে?
তোপের মুখে আজ ইস্পাতমন্ত্রী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অমিতবাবুকে\ চিঠির জবাব দিয়ে জানিয়েছেন, আরএমডি বিভাগ তুলে দিলেও দুর্গাপুর-বার্নপুরে লৌহ আকরিকের অভাব হবে না। বাজার থেকে বেশি দামেও লৌহ আকরিক কিনতে হবে না। প্রধানের আরও দাবি, সস্থার কর্মী সংখ্যা কমানোরও পরিকল্পনা নেই।
প্রধানের যুক্তি, সমস্ত সেল কারখাতেই গোটা বছরের উৎপাদন পরিকল্পনা অনুযায়ী লৌহ আকরিক পাঠানো হয়। পশ্চিমবঙ্গে কোনও লোহার খনি না থাকলেও অন্য রাজ্য থেকে তা পাঠানো হবে। এখন যেমন কেন্দ্রীয় ভাবে বিভিন্ন কারখানার জন্য লৌহ আকরিক বরাদ্দ করা হয়, ভবিষ্যতেও সেই ব্যবস্থা বজায় থাকবে। অমিতবাবুকে আশ্বস্ত করতে প্রধান জানিয়েছেন, দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট ও বার্নপুরের ইসকো—দুটিই সেল-এর কাছে গুরুত্বপূর্ণ কারখানা। কারখানার সম্প্রসারণের জন্য বিরাট লগ্নি করা হয়েছে। সংস্থার প্রয়োজনে কাঁচামালের জোগানে আরও খনন করতে হবে।
সেল-এর কাঁচামাল সরবরাহের বিভাগ (আরএমডি) সরানোর পরিকল্পনার প্রতিবাদ জানিয়ে অমিত মিত্রের পরে এ বার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠালেন কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির রাজ্য নেতৃত্ব। চিঠির প্রতিলিপি দেওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। চিঠিতে তাঁদের বক্তব্য, বাংলা, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, অধুনা ছত্তীশগঢ়-সহ অবিভক্ত মধ্যপ্রদেশে ছড়িয়ে থাকা খনি এবং ইস্পাত কারখানাগুলির সঙ্গে যোগাযোগের সুবিধার কারণেই কলকাতায় আরএমডি রাখা হয়েছিল। তা বন্ধ করে দিলে বা সরিয়ে নিলে পরিবহণের খরচ বাড়বে, কাঁচামাল পৌঁছনোয় সমস্যা হবে এবং অস্থায়ী ও চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকদের অনেকে কাজ হারাবেন।