প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফরের আগেই পশ্চিমবঙ্গের ছিটমহলগুলির জন্য পুনর্বাসন প্যাকেজটির অনুমোদন দিয়ে দিল কেন্দ্র।
অর্থ মন্ত্রক সূত্রে খবর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ও বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে বৈঠকে স্থির করেন তাঁর ঢাকা সফরের আগেই পশ্চিমবঙ্গকে প্রতিশ্রুতি মাফিক সহযোগিতার অর্থের ছাড়পত্র দেওয়া হবে। এর পর জেটলি তাঁর মন্ত্রকের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে বিষয়টি চূড়ান্ত করে ফেলেন। গত মাসেই বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ সংসদে ঘোষণা করেছিলেন, স্থলসীমান্ত চুক্তি কার্যকর করার পরে বাংলাদেশ থেকে আসা ছিটমহলবাসীদের পুনর্বাসনের জন্য পশ্চিমবঙ্গকে ৩০০৮ কোটি টাকার প্যাকেজ দেওয়া হবে। গত বছরই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের থেকে এই প্যাকেজ চেয়েছিলেন।
মোদী সরকারের এক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী এ দিন বলেন, দু’দিন পরেই প্রধানমন্ত্রী ঢাকা যাচ্ছেন। সেখানে স্থলসীমান্ত চুক্তির মতো বড় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। কলকাতা থেকে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতাও। সাধারণত এ ধরনের কোনও আন্তর্জাতিক চুক্তি সম্পাদন করার আগে এর সঙ্গে আনুষঙ্গিক সমস্ত বকেয়া বিষয় মিটিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গকে প্যাকেজ দেওয়ার বিষয়টি চাইলে পরেও করা যেতে পারত। কিন্তু রাজ্যের পক্ষ থেকে যাতে কোনও অভিযোগ না ওঠে, প্রধানমন্ত্রী তাই ঢাকা যাওয়ার আগেই এই বিষয়টি মিটিয়ে ফেলতে চেয়েছেন। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘মমতা যখন এক ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশে যাচ্ছেন, তখন তাঁকে সন্তুষ্ট রাখাটাও দায়িত্ব কেন্দ্রের।’’
ঢাকায় দু’দেশের মধ্যে চুক্তিটি হওয়ার পরে ছিটমহল হস্তান্তরের প্রক্রিয়াটি শুরু হয়ে যাবে। ছিটমহলের বাসিন্দাদের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হবে, তাঁরা কোন দেশেরক নাগরিকত্ব চান। যদি তাঁরা ভারতীয় ভূখণ্ডে থাকতে চান, তাহলে স্থানীয় জেলা প্রশাসন তাঁদের পরিচয়পত্র দেবেন। কত জন মানুষ কোন দিকে থাকতে চান, তা নিয়ে একটি প্রাথমিক সমীক্ষা ইতিমধ্যেই করা হয়েছে। তবু চুক্তি সম্পাদন হওয়ার পর আনুষ্ঠানিক ভাবে সেই প্রক্রিয়া শুরু হবে। শেষ পর্যন্ত যদি কম সংখ্যক মানুষ আসেন, তাহলে পুনর্বাসনের খরচ কম হবে। কিন্তু স্পর্শকাতর সীমান্ত অঞ্চলের পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সর্বোচ্চ অর্থ ধরেই প্যাকেজের হিসেব কষা হয়েছে। তার পরই সীমান্তে পাকাপাকি ভাবে কাঁটাতারের বেড়া লাগানো হবে।