Central Government-West Bengal Government

তেলের উপরে ভাসছে বাংলা! কিন্তু ড্রিলিংয়ে ছাড়পত্র দেয়নি রাজ্য, অভিযোগ কেন্দ্রের

ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের একাধিক স্থানে ‘সাইসমিক সার্ভে’ চালিয়েছে কেন্দ্র। তাতে অন্তত চারটি স্থানে তেল ও গ্যাসের বিপুল ভান্ডার রয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে।

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২৪ ০৮:৫৯
Share:

নরেন্দ্র মোদী (বাঁ দিকে)। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রক জানাচ্ছে, কার্যত তেলের উপরে ভাসছে পশ্চিমবঙ্গের একাংশ। শুধু তেল নয়, প্রাকৃতিক গ্যাসের ভান্ডারও রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর ও সংলগ্ন এলাকায়। যে তেল-গ্যাস বাণিজ্যিক ভাবে উত্তোলন করা সম্ভব হলে, বদলে যাবে পশ্চিমবঙ্গের সামগ্রিক অর্থনীতি। কিন্তু সেই তেলের খোঁজে প্রয়োজনীয় ‘ড্রিলিং’-এর অনুমতি রাজ্য সরকার দিচ্ছে না বলে সুর চড়াল ওই মন্ত্রক।

Advertisement

যদিও রাজ্য প্রশাসনিক সূত্রে বক্তব্য, অশোকনগরের প্রকল্পে ‘ড্রিলিং’ কোথা থেকে শুরু এবং কোথায় গিয়ে শেষ হবে, তা বোঝা যাচ্ছিল না। তাই তাতে বিপদের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছিল না। সংশ্লিষ্ট সূত্রের অনুমান, বিষয়টি স্পষ্ট না হওয়ার কারণে সম্ভবত এখনও তা আটকে রয়েছে।

ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের একাধিক স্থানে ‘সাইসমিক সার্ভে’ চালিয়েছে কেন্দ্র। তাতে অন্তত চারটি স্থানে তেল ও গ্যাসের বিপুল ভান্ডার রয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক জানিয়েছে, অশোকনগর-১ (তেল ও গ্যাস), অশোকনগর-২ (গ্যাস), কনকপুল-১ (গ্যাস), পাটুলি-১ (হাইড্রোকার্বন) ছাড়া অশোকনগর-১ ও কনকপুল-১-এলাকায় মাটির নীচে হাইড্রোকার্বনের ভান্ডারও রয়েছে। গ্যাসের ভান্ডারের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে রানাঘাট-২ এলাকায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিস্থিতি ইতিবাচক হলে পশ্চিমবঙ্গে শিল্পের চেহারাই বদলে যেতে বাধ্য। পেট্রোপ্রকল্পে বিনিয়োগ বাড়বে রাজ্যে। যার হাত ধরে পশ্চিমবঙ্গের আর্থ-সামাজিক ছবি পাল্টে যাবে।

Advertisement

কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক জানিয়েছে, প্রাথমিক পরীক্ষায় উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, বর্ধমানের একাংশে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস থাকার সম্ভাবনা ধরা পড়েছে। সেই কারণে ইতিমধ্যেই ১১,৬১৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় তা উত্তোলনের প্রশ্নে সমস্ত পরিকল্পনা নিয়ে ফেলেছে ওনজিসি-অয়েল ইন্ডিয়া। কিন্তু সেই কাজ শুরুর আগে ‘ড্রিলিং’-এর লক্ষ্যে রাজ্যের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় পেট্রোলিয়াম মাইনিং লিজ় (পিএমএল) বা ছাড়পত্র প্রয়োজন। মূলত তেল ভান্ডারের পরিমাণ, তা মাটির কত নীচে রয়েছে, তা উত্তোলন লাভজনক হবে কি না, তা দেখার জন্য ওই ড্রিলের প্রয়োজন রয়েছে।

ওই ছাড়পত্রের জন্য ২০২০ সালে নবান্নের কাছে আবেদন জানিয়েছিল ওএনজিসি। ২০২৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি এবং এ বছরের ১২ জানুয়ারি ফের পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে চিঠি লেখে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক। ৪ জুলাই রাঁচীতে ইস্টার্ন জ়োনাল কাউন্সিলের বৈঠকেও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বিষয়টি তোলা হয়। কিন্তু কাজ হয়নি। বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘সমীক্ষার কাজে ওএনজিসি এবং অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেড অর্থ বিনিয়োগ করে ফেলেছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র দেওয়ার প্রশ্নে ঝুলিয়ে রেখেছে রাজ্য সরকার। কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হরদীপ পুরীর সঙ্গে আলোচনা করেছি। ভবিষ্যতে প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দরবার করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement