মমতাকে চিঠি কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর।
রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগের কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি ওই চিঠিতে লিখেছেন, এ ধরনের অভিযোগ ভবিষ্যতের প্রজন্মকে অনুৎসাহিত করবে। ধর্মেন্দ্রর এই চিঠির পাল্টা তৃণমূল তাঁকে তীব্র আক্রমণ করেছে। তিনি ‘অকারণ’ রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ছেন বলে মন্তব্য করেছে রাজ্যের শাসকদল।
মমতাকে লেখা চিঠিতে ধর্মেন্দ্র লিখেছেন, ‘সমাজের ভিত্তি হল শিক্ষা। আমাদের দেশের প্রতিভা এবং সম্পদ বৃদ্ধির জন্য জরুরি। সেই শিক্ষা ব্যবস্থারই কেন্দ্রে রয়েছেন শিক্ষকরা। সমাজের বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখার জন্য শিক্ষকদের স্বচ্ছ নিয়োগও ততটাই জরুরি। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে যে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে তা উদ্বেগের। এই অনিয়ম ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উপরেও খারাপ প্রভাব ফেলবে।’ চিঠির শেষে এই বিষয়ে জনগণের আস্থা ফেরাতে মুখ্যমন্ত্রীকে পদক্ষেপ করারও আবেদন জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী।
কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর এই চিঠি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রাজ্যের শাসকদল। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে রাজনীতি করার অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর অকারণ রাজনীতিতে জড়ানো ঠিক হচ্ছে না। শিক্ষায় পশ্চিমবঙ্গের মান যথেষ্ট উন্নত। বিশ্ববিদ্যালয়গুলুর যে সর্বভারতীয় র্যাঙ্কিং দেখা গিয়েছে, তাতে রাজ্যের অবস্থান অনেক উপরে। ডাবল ইঞ্জিন সরকারের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির অবস্থা সবাই দেখেছে। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বভারতীর অবনমন ঘটেছে।’’ কুণাল বিজেপিশাসিত অন্য রাজ্যগুলির প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ত্রিপুরায় ১০ হাজার ৩২৩ জন শিক্ষকের কেন চাকরি গিয়েছে? কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী তাঁদের আবেগ নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছেন। নিয়োগ নিয়ে একটা খারাপ কাজ হয়েছে। অন্যায় সব সময় অন্যায়। সেটা নিয়ে রাজনীতি করতে গিয়ে বিজেপি ও বাম রাজ্যের কেলেঙ্কারি ধামাচাপা দিতে চান শিক্ষামন্ত্রী। ওই পদের কারও সস্তা রাজনীতিতে জড়ানো ঠিক না।’’
কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর পথেই রাজ্যের দিকে আঙুল তুলেছেন রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘এ রাজ্য থেকে মেধা ভিন্ রাজ্যে সরে যায়। ইউজিসি গাইডলাইন না মেনে উপাচার্য নিয়োগ চলেছে। অনার্স পাওয়ার জন্য এ রাজ্যে তৃণমূল ছাত্রনেতাদের উৎকচ দিতে হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের।’’ পাশাপাশি, তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর এ রাজ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বেড়েছে বলে কুণাল যে দাবি করেন শমীক তা নিয়ে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে রাজনৈতিক স্বার্থে। শিক্ষার স্বার্থে নয়।’’