West Bengal Assembly Election 2021

মুকুলকে একুশের ভোটে ‘বড়’ কাজে ব্যবহার করতে চায় বিজেপি

বিধানসভা ভোটের আগে তাঁকে তৃণমূল ‘ভাঙানো’র কাজে ব্যবহার করার পরিকল্পনা বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২০ ০৩:৪৬
Share:

বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়। ফাইল চিত্র।

রাজ্য বিজেপির দলীয় অঙ্কে মুকুল রায়ের অবস্থান ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসার পরে এত দিন পর্যন্ত তিনি দলে কিছুটা কোণঠাসা ছিলেন। এ ব্যাপারে হতাশাও ঘনিষ্ঠ মহলে গোপন করতেন না। অবশেষে দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতির পদ লাভের সঙ্গে এ রাজ্যের প্রাক নির্বাচনী পর্বে মুকুলবাবুর ভূমিকা তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠছে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। সাধারণত বিজেপির কেন্দ্রীয় পদাধিকারীদের নিজেদের রাজ্যে বড় দায়িত্বে রাখা হয় না। তবে সহ সভাপতি হিসাবে মুকুলবাবুর কী দায়িত্ব হবে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখনও পর্যন্ত তা নির্দিষ্ট করে দেননি। ফলে মনে করা হচ্ছে, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে এখানেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় কাজে লাগানো হবে।

Advertisement

তৃণমূল থেকে আসা এই নেতা অতীতে হাতে-কলমে অনেকগুলি নির্বাচন করেছেন। নির্বাচনের সাংগঠনিক কুশলতায় তিনি দক্ষ বলে পরিচিতি আছে। বিজেপি সূত্রের খবর, সেই ‘দক্ষতা’কে দলীয় নেতৃত্ব কাজে লাগাতে চান। বিশেষত মুকুলবাবু তৃণমূলের অন্দরমহল সম্পর্কে অভিজ্ঞ বলে বিজেপি মনে করে। সে ক্ষেত্রে বিধানসভা ভোটের আগে তাঁকে তৃণমূল ‘ভাঙানো’র কাজে ব্যবহার করার পরিকল্পনা বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আছে। লোকসভা নির্বাচনের আগেও তৃণমূলে থাকা সৌমিত্র খান, অনুপম হাজরা, অর্জুন সিংহ থেকে শুরু করে সিপিএমের খগেন মুর্মু পর্যন্ত অনেককেই মুকুলবাবুর সাজানো ছকে বিজেপিতে যোগ দিতে দেখা গিয়েছিল।

এখন একই ভাবে সবচেয়ে বেশি শোনা যাচ্ছে তৃণমূলের এক জাঁদরেল মন্ত্রীর নাম। সরকারে এবং সংগঠনে বহু দায়িত্বে থাকা ওই নেতা ইদানীং শাসক শিবিরের সঙ্গে দৃশ্যত দূরত্ব বাড়াচ্ছেন। তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বও এ ব্যাপারে ওয়াকিবহাল। রাজনৈতিক মহলে জোর গুঞ্জন, ওই নেতার শিবির বদল এখন সময়ের অপেক্ষা। যদিও কোনও স্তরেই এ সব কথার কোনও আনুষ্ঠানিক সমর্থন মেলেনি।

Advertisement

আরও পড়ুন: হঠাৎ মিহিরের বাড়িতে নিশীথ, কোচবিহারের তৃণমূল বিধায়কের দলবদল নিয়ে জল্পনা

তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘আমাদের দলে ‘বিশ্বাসঘাতকদের’ স্থান নেই। তাঁরা যত দ্রুত চলে যান, তৃণমূলের পক্ষে ততই মঙ্গল।’’ যাঁকে ঘিরে এই গুঞ্জন, সেই তৃণমূল নেতা সরাসরি দল বদলাবেন নাকি আলাদা মঞ্চ গড়বেন, তা নিয়েও কৌতূহল রয়েছে যথেষ্ট। একটি সূত্রের দাবি, তিনি বিজেপির সঙ্গে নির্দিষ্ট সংখ্যক আসনের দাবি নিয়ে ‘দর কষাকষি’ করছেন। কারও মতে, সেই সংখ্যা ৮০, কারও মতে ৪০।

বিজেপির অধিকাংশের মতে, মুকুলবাবুর বর্তমান ভূমিকা অবশ্য এ সবের ঊর্ধ্বে। তাঁরা মনে করেন, ভোটে টিকিট বণ্টনের ক্ষেত্রে মুকুলবাবুর হস্তক্ষেপ এ বার প্রাধান্য পাবে। যদিও তিনি নিজে এ দিন বিনয়ের সঙ্গে বলেন, ‘‘বিজেপির মতো সর্বভারতীয় দলে আমার মতো এক জনের শক্তিবৃদ্ধি হওয়া-না হওয়ার আলোচনাই অবান্তর। আমি যা ছিলাম, তা-ই আছি। কিছুই বৃদ্ধি হয়নি।’’ একই প্রসঙ্গে দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘মুকুলদার শক্তি বাড়ল কিনা, সেটা ওঁর কাছেই জেনে নিন। আমরা সঙ্ঘের (আরএসএস) লোক। যখন যে দায়িত্ব দেওয়া হয়, সেটাই পালন করি।’’ বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, দলের প্রথা ভেঙে একটি কার্যকরী সভাপতির পদ তৈরি করে সেখানে অল্প দিন আগে আরএসএস ঘনিষ্ঠ হওয়া এক জনকে বসানো হতে পারে। তিনি লোকসভা ভোটে বিজেপির প্রার্থীও ছিলেন।

আরও পড়ুন: শাহ-ধনখড় কথায় বাড়ল রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের জল্পনা

রাজ্য বিজেপির এক শীর্ষ পদাধিকারীর বক্তব্য, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ সম্পর্কে অমিত শাহ নিজে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও তা একটি বড় দিক।’’ ওই নেতার আরও দাবি, ‘‘লোকসভা নির্বাচনের আগে শাহ নিজে সমীক্ষা করিয়েছিলেন। তারই ভিত্তিতে প্রার্থী বাছাই হয়েছিল। ১৮টি আসনে জিতে দল চমকপ্রদ ফল করে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement