মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
আগামী জুনে জিএসটি ক্ষতিপূরণের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। এই অবস্থায় জিএসটি-র মেয়াদ বৃদ্ধি এবং বকেয়া আদায়ের দাবিতে সব রাজ্যকে একজোট হওয়ার আহ্বান জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি চান, আরও অন্তত পাঁচ বছর যেন জিএসটি ক্ষতিপূরণ বজায় থাকে।
তেল ও গ্যাসের ধারাবাহিক মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কার্যত আকাশ ছোঁয়ায় সাধারণ মানুষ নাজেহাল। বৃহস্পতিবার মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সরকারি বৈঠকে কেন্দ্রের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী আবেদন জানান, জিএসটি ক্ষতিপূরণের মেয়াদ আরও পাঁচ বছর বাড়ানো হোক। নইলে রাজ্যগুলির আর্থিক পরিস্থিতি ভেঙে পড়বে।
মমতার উদ্বেগ, ‘‘দেশের যা আর্থিক পরিস্থিতি, তাতে আগামী দিনে সব রাজ্য সরকার বেতন দিতে পারবে কি না সন্দেহ।’’ অনেক প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকই জানাচ্ছেন, জুনে জিএসটি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পদ্ধতি শেষ হচ্ছে। তার পর থেকে এই খাতে আর অর্থ পাবে না রাজ্যগুলি। কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী অতিমারির ধাক্কায় শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, প্রতিটি রাজ্যেরই অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে। তাই আগে থেকেই জিএসটি ক্ষতিপূরণের মেয়াদ বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন দাবি জানান, জিএসটি ক্ষতিপূরণের প্রক্রিয়া কমপক্ষে আরও পাঁচ বছর বাড়ানো হোক। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রের কাছে পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। জিএসটি ক্ষতিপূরণের বকেয়া টাকাও পাওয়া যাচ্ছে না। তার উপরে সেস বসিয়ে পুরো টাকাটাই নিয়ে নিচ্ছে কেন্দ্র।’’
আর্থিক পর্যবেক্ষকেরা জানাচ্ছেন, বাজেটে রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে কিছুটা আশ্বস্ত করা হলেও তা পুরোপুরি শঙ্কামুক্ত নয়। তার উপরে রাজ্যকে সামাজিক খাতে বিপুল ব্যয় বরাদ্দ করতে হচ্ছে। পরিকাঠামো এবং নিত্য খরচের বহরও কম নয়। বেতন এবং পেনশন খাতেও বড় অঙ্ক ধরে রাখতে হয়। বাজার থেকে নেওয়া ঋণ শোধ করতেও বহু টাকা ব্যয় করতে হয় রাজ্য সরকারকে। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় অনুদান, করের ফেরতযোগ্য অংশ এবং জিএসটি ক্ষতিপূরণ যথাযথ না-হলে সমস্যা বাড়তে পারে।
এর পাশাপাশি মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এ দিন ফের তোপ দেগে মমতার মন্তব্য, ‘‘এটা পরিকল্পিত দুর্যোগ। প্রতিদিন মিথ্যা বলে নজর ঘোরানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’