ফাইল চিত্র।
ভাটপাড়ায় অর্জুন সিংহের উপরে হামলার ঘটনায় টনক নড়েছে দিল্লির। তাই ঠিক হয়েছে, রাজ্য বিজেপির কিছু নেতাকে আরও অন্তত চার মাস সুরক্ষা জোগাবে কেন্দ্রীয় সরকার।
নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর ‘ভিআইপি’ সংস্কৃতি বন্ধ করতে রাজ্য বিজেপির ১৩ জন নেতার কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা তুলে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ইতিমধ্যেই অরাজনৈতিক বেশ কয়েক জন ‘প্রভাবশালী’ ব্যক্তির নিরাপত্তা তুলেও নিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কিন্তু অর্জুন সম্প্রতি আক্রান্ত হওয়ার পরে দিল্লি নড়েচড়ে বসেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রাজ্য সরকারকে জানিয়ে দিয়েছে, আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজ্য বিজেপির ওই নেতারা কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পাবেন।
মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, অর্জুন সিংহ ছাড়াও সৌমিত্র খাঁ, অনুপম হাজরা, সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়া, নিশীথ প্রামাণিক, ভারতী ঘোষ, সিদ্ধার্থশেখর দাস, শান্তনু ঠাকুর, জয় বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিজিৎ দাস, খগেন মুর্মু, কবীরশঙ্কর বসু, দুলাল বরকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া হবে। ওঁদের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তার মেয়াদ চলতি মাসেই শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তা জানান, লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির প্রার্থী এবং কয়েক জন জেলা নেতার উপরে হামলার আশঙ্কা ছিল। সেই সময় তাঁদের সিআরপি বা সিআইএসএফের নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল। ঠিক ছিল, ভোট মেটার পরে সেই নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হবে। কিন্তু রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোটেই আশাব্যঞ্জক নয়। কয়েক দিন আগে ভাটপাড়ায় যে-ভাবে সাংসদের উপরে হামলা হয়েছে, তার পরে বিজেপি নেতাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে আর কোনও শৈথিল্য দেখানো ঠিক হবে না। সেই জন্যই ওই সাংসদ, জেলা নেতা এবং লোকসভার প্রার্থীদের নিরাপত্তা বহাল থাকবে।
রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর শাসক দলের ২০০ জনের বেশি নেতাকে পুলিশি নিরাপত্তা দিয়ে রেখেছে। কিন্তু বিরোধী দলের নেতাদের ক্ষেত্রে কয়েক জন ছাড়া কেউ পুলিশি নিরাপত্তা পান না। কিন্তু রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দিলেই অনেক জায়গায় বিরোধী দলের নেতাদের উপরে হামলা হচ্ছে। সেই সমস্ত ঘটনার কথা জানিয়েই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে নিরাপত্তারক্ষী বহাল রাখার আবেদন জানিয়েছিল রাজ্য বিজেপি। প্রাথমিক ভাবে তা খারিজ করে দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এখন বিজেপি নেতাদের মধ্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় জ়েড ক্যাটিগরির নিরাপত্তা পান। দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, রাহুল সিংহ, অর্জুন সিংহ, নিশীথ প্রামাণিক ভারতী ঘোষরা পেতেন ওয়াই ক্যাটিগরির নিরাপত্তা। সব মিলিয়ে ২০ জনকে নিরাপত্তা দিচ্ছিল কেন্দ্র। তাঁদের মধ্যে ১৩ জনের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা তুলে নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল। পরিস্থিতি বুঝে তাঁদের সকলেরই নিরাপত্তা আপাতত বহাল থাকছে।