ration

মুখ্যসচিবদের রেশন দোকানে যেতে অনুরোধ, রেশন নীতি কার্যকর করতে বিশেষ পরিকল্পনা কেন্দ্রের

রেশন-ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে বিভিন্ন রাজ্যে যাওয়ার কথা কেন্দ্রীয় দলের। রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি পাঠিয়ে কেন্দ্রের প্রস্তাব, সেই কাজে জেলাশাসক এবং সিনিয়র অফিসারদেরও যুক্ত করতে হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:২৫
Share:

নতুন রেশন নীতি কার্যকর করতে পরিকল্পনা কেন্দ্রের। ফাইল চিত্র।

নতুন রেশন নীতি কার্যকর করতে রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদেরও কার্যত যুক্ত করার পরিকল্পনা করল কেন্দ্রীয় সরকার।

Advertisement

রেশন-ব্যবস্থা সশরীরে খতিয়ে দেখতে বিভিন্ন রাজ্যে যাওয়ার কথা কেন্দ্রীয় দলের। সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি পাঠিয়ে কেন্দ্রের প্রস্তাব, সেই কাজে জেলাশাসক এবং সিনিয়র অফিসারদেরও যুক্ত করতে হবে। এমনকি, স্বয়ং মুখ্যসচিবকেও এই কাজে যুক্ত হওয়ার অনুরোধ করেছে কেন্দ্র। রেশন দোকানগুলি ঘুরে দেখার কাজ আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে শেষ করতে বলা হয়েছে। তাতে অফিসারদের থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আগামী ৫ জুলাই চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করবে কেন্দ্র।

১ জানুয়ারি থেকে পরবর্তী এক বছর গোটা দেশে পুরোপুরি নিখরচায় রেশনের চাল-গম বিলি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। সরকারি সূত্রের খবর, গোটা দেশে নিখরচায় একই পরিমাণ রেশন বিলি করে মোদী সরকার একে ‘এক রাষ্ট্র, এক দাম, এক রেশন’ হিসেবে তুলে ধরবে। ভবিষ্যতে এই প্রকল্পকে ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব অন্ন সুরক্ষা যোজনা’ নামকরণ করে নতুন মোড়কে চালু করার প্রস্তাবও রয়েছে। পর্যবেক্ষকদের অনুমান, এরই ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে রেশন ব্যবস্থা সরেজমিনে খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।

Advertisement

কেন্দ্রীয় খাদ্য এবং সরবরাহ মন্ত্রকের সচিব সুধাংশু পান্ডে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, কেন্দ্র এবং রাজ্যের সিনিয়র অফিসাররা কিছু সংখ্যক রেশন দোকানের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন। রাজ্যকে এক জন নোডাল অফিসার নিয়োগ করতে হবে। কাজে লাগাতে হবে জেলা শাসক, সচিব, প্রধান সচিব এবং অন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারকে। কেন্দ্রীয় সচিবের অনুরোধ, মুখ্যসচিব যেন তাঁর ব্যস্ত সময়ের কিছুটা বের করে অন্তত এক-দু’টি রেশন দোকানের পরিস্থিতি নিজে খতিয়ে দেখেন। তা হলে বাকি অফিসারেরা উৎসাহ পাবেন। প্রসঙ্গত, বাকি রাজ্যগুলির মুখ্যসচিবদেরও একই কথা জানানো হয়েছে।

কেন্দ্র জানিয়েছে, প্রায় ৩৯ ধরনের বিষয়ের উপরে পর্যবেক্ষণ করে অভিজ্ঞতা জানাতে হবে অফিসারদের। লিখতে হবে সবিস্তার মতামতও। তার মধ্যে অন্যতম, রেশন দোকানপিছু কত জন উপভোক্তা রয়েছেন, তাঁদের অভিজ্ঞতা কেমন, খাদ্যশস্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা, রেশন ব্যবস্থায় চালু প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে কি না, রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার সংযোগ রয়েছে কি না ইত্যাদি। তবে প্রশাসনিক কর্তা এবং রেশন ডিলারদের অনেকে মনে করছেন, এর সঙ্গে কেন্দ্র দেখতে চায়, ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা’-র নাম ব্যবহার হচ্ছে কি না, সেই প্রকল্পে দেওয়া খাদ্যশস্যের জন্য উপভোক্তার থেকে অর্থ নেওয়া হচ্ছে কি না, তা-ও।

‘অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু জানিয়েছেন, জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন অনুযায়ী, দোকানের বাইরে রেশনসামগ্রী যাওয়ার কথা নয়। কিন্তু এ রাজ্যে দুয়ারে রেশন কার্যকর রয়েছে। তাই সেই পরিস্থিতিও হয়তো বুঝতে চায় কেন্দ্র। তাঁর কথায়, “আগে রেশন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী না করে এই ধরনের পদক্ষেপ না করাই ভাল কেন্দ্রের। আগে পরিকাঠামো-ব্যবস্থাপনা ঠিক করা হোক। তার পরে খামতি ধরা হোক। তবে জানিয়ে রাখা ভাল, প্রধানমন্ত্রীর নামাঙ্কিত প্রকল্পের উল্লেখ করেই মানুষকে রেশনসামগ্রী দিচ্ছেন ডিলারেরা।”

সরকারি সূত্রের বক্তব্য, রাজ্যের প্রায় ছ’কোটি রেশন-উপভোক্তা জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের সুবিধা পাচ্ছেন। রাজ্যে মোট রেশন কার্ডের সংখ্যা প্রায় ৯.১২ কোটি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বরাবরই দাবি করে এসেছেন, বাকিদেরও ওই আইনের আওতায় আনা হোক। যদিও, রাজ্যের দাবি, খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতার বাইরে থাকা মানুষদের নিখরচায় রেশন দিচ্ছে তারাই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement