এনআরএস কান্ডে মুখ খুললেন সিধু-কমলেশ্বর ।
এনআরএস কাণ্ডে উত্তাল গোটা রাজ্য। তার মধ্যেই মুখ খুললেন পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। তিনি নিজেও এক জন চিকিৎসক। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক নিগ্রহের তীব্র নিন্দা করে কমলেশ্বর প্রশ্ন তুললেন, ‘জুলুমবাজদের ক্ষেপিয়ে তোলা’ এবং ‘লেলিয়ে দেওয়া’ বন্ধ হবে কবে? প্রায় এক সুরেই প্রতিবাদ জানিয়েছেন গায়ক সিধুও (সিদ্ধার্থ রায়)। তিনি নিগ্রহের ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন।
নিজের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট করেন কমলেশ্বর। সেখানে তিনি লেখেন, ‘‘চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে এই অরাজকতা আর কত দিন সহ্য করব আমরা? কত দিন চলবে এই অসভ্য লুম্পেনদের জুলুমবাজি? ঠিক কত দিন চিকিৎসা পরিষেবার উন্নয়নের গালগল্প চলবে? আর কত দিন চিকিৎসকেরা কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা পাবেন না? কত দিনে শাস্তি দেওয়া যাবে এমন জুলুমবাজদের? ঠিক কত দিনে এই জুলুমবাজদের ক্ষেপিয়ে তোলা ও লেলিয়ে দেওয়া বন্ধ হবে?’’ এর পর কমলেশ্বরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিজের ক্ষোভ উগরে দেন। বলেন, ‘‘চিকিৎসা করতে গিয়ে ডাক্তারদের যদি সুরক্ষা না থাকে, তা হলে অন্য যে কোনও কাজের মতো ডাক্তারিটাও করা সম্ভব নয়। কারণ, ডাক্তারিতে কখনও দুইয়ে দুইয়ে চার হয় না।’’
ওই চলচ্চিত্র পরিচালকের মতে, মানুষের জিনের ফারাকের মতো ওষুধের কাজ করার ক্ষেত্রেও তারতম্য হয়। সব রোগী সব ওষুধে একই রকম ভাবে সাড়া দেন না। কোনও রোগী মারা গেলেই ডাক্তারদের ধরে মারধর করা কখনওই সমর্থনযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। কমলেশ্বর জানান, প্রশাসনের উচিত চিকিৎসকদের সুরক্ষা দেওয়া। প্রশাসন যদি সে কাজে বিফল হয় তা মেনে নেওয়া যায় না। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাবে এসএসকেএম হাসপাতালে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তা নিয়েও কমলেশ্বর নিজের মত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘সব থেকে বেশি দুঃখিত হয়েছি, প্রশাসনের হুমকি দেওয়ায়। ডাক্তাররা পদবী যাচাই করে রোগী দেখেন, এই কথা শুনে। এই কথা সর্বৈব ভাবে মিথ্যা ও সম্মানহানিকর।’’
গানের জগতে পরিচিত নাম সিধুও এক জন চিকিৎসক। এ দিন সিধু বলেন, ‘‘অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। ১০০ জনের মধ্যে এক জন কর্তব্যে গাফিলতি করলে তার মাশুল দিতে হচ্ছে সবাইকে। জনমানসে অদ্ভুত এক মনোভাব কাজ করছে যে, চিকিৎসায় কোনও ভুল বা অসুবিধা হলেই ডাক্তারদের মারধর কর। এটা সম্পূর্ণ ভুল।’’ একটা সময় তিনি নিজেও জুনিয়র ডাক্তার হিসাবে সরকারি হাসপাতালে কাজ করেছেন। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে সিধু বলেন, ‘‘নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, ডাক্তাররা রোগীর চিকিৎসা করবে বলেই এই পেশা বেছে নিয়েছে। তাঁদেরকে বিনা অপরাধে এ ভাবে মারধর করা হবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি।’’
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য সঙ্কট আরও জটিল, ফুঁসছে চিকিৎসক মহল, কড়া অবস্থানে অনড় সরকারও