সন্দেশখালির শাহজাহান শেখের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন যোগ করার ভাবনা সিবিআইয়ের। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
সন্দেশখালি থেকে বাজেয়াপ্ত করা অস্ত্র নিয়ে বসিরহাট আদালতে গেল সিবিআই। শাহজাহান শেখের বিরুদ্ধে মামলায় এ বার অস্ত্র আইন যোগ করার কথা ভাবছে তারা। বাজেয়াপ্ত করা অস্ত্র নিয়ে আদালতে রিপোর্ট জমা দেবে কেন্দ্রীয় সংস্থা। সেই সঙ্গে ওই অস্ত্র তদন্তের স্বার্থে নিজেদের হেফাজতে রাখার আবেদনও জানানো হবে বলে সিবিআই সূত্রে খবর।
গত শুক্রবার সন্দেশখালিতে শাহজাহানের ঘনিষ্ঠের আত্মীয় আবু তালেব মোল্লার বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল সিবিআই। সেখান থেকে পাওয়া যায় বেশ কিছু অস্ত্র। সেই সূত্রেই এনএসজি-কে ডেকে পাঠানো হয়। উদ্ধার করা হয় বেশ কিছু বোমা। ‘ক্যালিবার’ যন্ত্র দিয়ে সন্দেশখালিতে আরও বোমার খোঁজে তল্লাশি চলে দিনভর। সে দিন অস্ত্রের সঙ্গে আবু তালেবের বাড়ি থেকে পরিচয়পত্র উদ্ধার করেছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা। শাহজাহানের পরিচয়পত্রও পাওয়া গিয়েছিল। এমনকি, কলকাতার দোকান থেকে শাহজাহানের নামে কেনা কার্তুজের রসিদও পেয়েছিলেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা।
সিবিআই সূত্রে খবর, বাজেয়াপ্ত করা অস্ত্রের মধ্যে একটি তাঁর ভাই আলমগিরের কেনা। এ ছাড়া, শাহজাহানের নামে অস্ত্রের লাইসেন্সও পেয়েছেন তদন্তকারীরা। সিবিআই মনে করছে, সন্দেশখালিতে শাহজাহান এবং তাঁর অনুগামীদের মজুত করা আরও অস্ত্র থাকতে পারে।
কেন্দ্রীয় সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, এনএসজি সন্দেশখালি থেকে একটি ব্যাগ উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছে। তার মধ্যে অন্তত দু’টি অস্ত্র থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। থাকতে পারে বিস্ফোরক পদার্থও। ব্যাগ নিয়ে এনএসজি পৃথক রিপোর্ট দেবে।
সিবিআই সূত্রে খবর, শাহজাহানের সঙ্গে অস্ত্রের কারবারের যোগ পাওয়া গিয়েছে। শুধু জমি কেনাবেচা বা জমির চরিত্র বদল করে টাকা নয়ছয় নয়, সেই টাকা বিদেশি অস্ত্র কারবারে ব্যবহার করেছেন শাহাজাহান। তাই তাঁর বিরুদ্ধে মামলায় অস্ত্র আইন যোগ করা হতে পারে।
উল্লেখ্য, সোমবার কলকাতার নগর দায়রা আদালতে একই অভিযোগ জানিয়েছে ইডিও। সূত্রের খবর, তাঁদের আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, শাহজাহান সন্দেশখালির গ্রামবাসীদের কাছ থেকে জোর করে যে জমি দখল করেছেন, তার টাকা দিয়ে তিনি অস্ত্রও কিনে থাকতে পারেন। শাহজাহানের স্ত্রী এবং পরিবারের সদস্যদের জেরা করে এই সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলে খবর। অর্থাৎ, সন্দেশখালির ঘটনায় শাহজাহান এবং তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে ওঠা অন্যতম মূল অভিযোগ জমি জবরদখলকে এ বার অস্ত্র কারবারের সঙ্গে মেলাতে চাইছে ইডি এবং সিবিআই, দুই কেন্দ্রীয় সংস্থাই।