প্রতীকী ছবি।
তদন্তকারী দলের অধিকাংশই অবাঙালি অফিসার। তাই পশ্চিমবঙ্গে ভোট-পরবর্তী হিংসা সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্তে নেমে তাঁরা ভাষাগত সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। এই সমস্যার মোকাবিলায় ভিন্ রাজ্যের ৪০ জন বাংলাভাষী কনস্টেবল নিয়োগ করছে সিবিআই।
প্রশ্ন উঠছে, যে-রাজ্যে তদন্ত হচ্ছে, সেটা বাংলা এবং সেখানে তো বাংলার সঙ্গে সঙ্গে হিন্দি জানা বাঙালি কনস্টেবলের অভাব নেই। সে-ক্ষেত্রে দোভাষীর প্রয়োজন হয়ে থাকলে তাঁদের মধ্য থেকে কিছু লোককে বেছে নেওয়া হচ্ছে না কেন? জবাবে এ রাজ্যের পুলিশের বিরুদ্ধে বিরোধী দল-সহ বিভিন্ন স্তরে ওঠা পক্ষপাতের অভিযোগ শুনিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
সিবিআইয়ের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘আমাদের তদন্তকারী দলের অবাঙালি অফিসারেরা জেলায় জেলায় অভিযোগকারীদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ভাষা-সমস্যায় পড়ছেন। অনেক ক্ষেত্রেই তাঁরা অভিযোগ ঠিকঠাক বুঝতে পারছেন না।’’ কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে সিবিআইয়ের অফিসারেরা বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ঘুরে তদন্ত চালাচ্ছেন। এই কাজে তাঁদের প্রত্যন্ত গ্রামেও যেতে হচ্ছে। বেশির ভাগ অফিসার হিন্দিভাষী। আবার বাংলার প্রত্যন্ত গ্রামের বহু মানুষ হিন্দিতে সড়গড় নন। তাঁদের অভিযোগ যে ঠিক কী, তা বুঝতে সমস্যা হচ্ছিল তদন্তকারী দলের। কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্থানীয় হিন্দি-জানা মানুষ দোভাষীর কাজ করে দিচ্ছিলেন ঠিকই। কিন্তু রূপান্তরিত ভাষায় অভিযোগকারী বা অভিযোগকারিণীর বক্তব্য ঠিক ভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিচ্ছে সিবিআই-কর্তাদের মনেই। সে-ক্ষেত্রে কি এই বাংলার পুলিশের সাহায্য নেওয়া যেত না?
সিবিআই-কর্তাদের বক্তব্য, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী হিংসা-অশান্তি সংক্রান্ত এই মামলার তদন্তে রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ উঠেছে। তাই বঙ্গের পুলিশকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে তদন্তে নামলে বিতর্কের সৃষ্টি হতে পারে। সেই বিতর্ক এড়াতেই ভিন্ রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনের কাছে সেখানকার কিছু বাংলাভাষী কনস্টেবল চাওয়া হয়েছিল। সিবিআই জানিয়েছে, অন্যান্য রাজ্যে আপাতত ৪০ জন বাংলাভাষী কনস্টেবল পাওয়া গিয়েছে। এ বার থেকে সিবিআইয়ের প্রতিটি তদন্তকারী দলের সঙ্গেই তাঁদের রাখা হবে। তাঁরা দোভাষীর কাজ করবেন। ঘটনার বিবরণ শোনা এবং অভিযোগ নথিভুক্তির ক্ষেত্রে ওই কনস্টেবলরা সাহায্য করবেন।