সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। ফাইল চিত্র।
সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’র ‘ঘনিষ্ঠ’ রাহুল বেরাকে এ বার নিজাম প্যালেসে ডেকে পাঠিয়েছিল সিবিআই। সেই তলব পেয়েই বৃহস্পতিবার সিবিআই দফতরে হাজিরা দিলেন রাহুল। কী কারণে তাঁকে তলব করা হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় ইডির পাশাপাশি সিবিআইও তদন্ত চালাচ্ছে। সেই সূত্রেই রাহুলকে তলব করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ঘটনাচক্রে, এই রাহুলের বিরুদ্ধেই ইডির দাবি ছিল, ‘কাকু’র নির্দেশে ফোন থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মুছে দিয়েছিলেন তিনি। সেই তথ্যপ্রমাণও তারা পেয়েছে। শুধু তা-ই নয়, ইডি সূত্রে দাবি করা হয়েছিল যে, ‘কাকু’র ফোন ট্যাপ করে তারা জানতে পারে রাহুলকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য মুছে ফেলার জন্য। গত ৩০ মে ১১ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর সুজয়কে গ্রেফতার করে ইডি। তার পরের দিন তাঁকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করে ইডি জানিয়েছিল, নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সুজয়ের কথায় ফোন থেকে মুছে দিয়েছিলেন রাহুল। এই বিষয়ে সুজয়কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেন। কিন্তু তাদের কাছে এই সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপ্রমাণ আছে বলে দাবি করেছিল ইডি।
নির্দেশ যিনি দিচ্ছিলেন সেটা যে ‘কাকুর’ই গলা ছিল, তা প্রমাণ করার জন্য তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। কিন্তু ‘শারীরিক অসুস্থতার’ জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় সুজয়কৃষ্ণকে। তাঁর গলার স্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়ে বার বার ফিরে আসতে হয় তদন্তকারীদের। তার পরই বিষয়টি আদালতে তোলে ইডি।
দুর্নীতির তদন্তের স্বার্থে ‘কাকু’র কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তা বার বার বলে ইডি। সূত্রের খবর, ‘কাকু’র একাধিক ভয়েস কল রেকর্ডিং মোবাইল থেকে উদ্ধার করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে ‘কাকু’, দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা পরিষদের প্রাক্তন সদস্য জ্ঞানানন্দ সামন্ত ও সিভিক ভলান্টিয়ার রাহুল বেরার কাছ থেকে পাঁচটি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করেছিল ইডি। সেখান থেকে হোয়াট্সঅ্যাপ চ্যাট, সাধারণ মেসেজ এবং ভয়েস কল রেকর্ডিং উদ্ধার হয়েছিল। অবশেষে জানুয়ারির গোড়ার দিকে ‘কাকু’র কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করে ইডি।