তৃণমূলের দুই কাউন্সিলর দেবরাজ চক্রবর্তী এবং বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত। —ফাইল চিত্র ।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিধাননগর পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর তথা গায়িকা-বিধায়ক অদিতি মুন্সীর স্বামী দেবরাজ চক্রবর্তীকে তলব করল সিবিআই। বুধবার দেবরাজকে তলব করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। একই সঙ্গে ওই একই মামলায় তলব করা হয়েছে কলকাতা পুরসভার ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্তকেও। বৃহস্পতিবারেই দুই তৃণমূল নেতাকে কলকাতার সিবিআই দফতর নিজাম প্যালেসে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ সিবিআই দফতরে পৌঁছন দেবরাজ এবং বাপ্পাদিত্য। নিজাম প্যালেসে ঢোকার সময় দেবরাজ বলেন, ‘‘বুধবার নোটিস দিয়ে বৃহস্পতিবার ডাকা হয়েছে। খুব অল্প সময় দেওয়া হয়েছে। ২৪ ঘণ্টাও দেওয়া হয়নি। তবে আমি তদন্তে সহযোগিতা করব।’’ তদন্তে সহযোগিতা করবেন বলে জানান বাপ্পাদিত্যও।
উল্লেখ্য, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে তাঁদের বাড়িতে আগেই তল্লাশি চালিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। গত নভেম্বরে দেবরাজের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিলেন সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিকেরা। এমনকি, বিধায়ক স্ত্রী অদিতির গানের স্কুলেও তল্লাশি চালানো হয়েছিল। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, তল্লাশি অভিযানে দেবরাজের কাছ থেকে টেটের কয়েকটি মার্কশিট এবং বদলির আবেদনপত্র পাওয়া গিয়েছিল। সেগুলি বাজেয়াপ্ত করে সিবিআই। ওই একই দিনে বাপ্পাদিত্যের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েও চাকরি সংক্রান্ত নথি পাওয়া গিয়েছিল বলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, কলকাতা হাই কোর্টের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত যে রিপোর্ট সিবিআই জমা দিয়েছে, তাতে দেবরাজ এবং বাপ্পাদিত্যের নাম রয়েছে। বিচারপতি অমৃতা সিংহের বেঞ্চে জমা পড়া ওই রিপোর্টে দুই তৃণমূল নেতাকে নিয়োগ দুর্নীতির ‘এজেন্ট’ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে বলেও সিবিআই সূত্রে খবর। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, তৃণমূলের দুই কাউন্সিলর ছাড়াও ‘এজেন্ট’ হিসাবে মহিদুল আনসারি, জফিকুল ইসলাম, সজল কর এবং সৌরভ ঘোষের নামের উল্লেখ রয়েছে।
দেবরাজ এবং বাপ্পাদিত্যের ঠিকানায় তল্লাশি চালিয়ে যে নথি উদ্ধার করা হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও আদালতে জানিয়েছিল সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, দুই তৃণমূল নেতার ঠিকানা থেকে পাওয়া নথি বিশ্লেষণ করার পরেই দুই তৃণমূল কাউন্সিলরকে বৃহস্পতিবার তলব করা হয়েছে। ওই নথি ধরে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলেও সিবিআই সূত্রে খবর।