রাজীব কুমার। ফাইল চিত্র।
আদালত থেকে আগাম জামিন পেতে আবেদনকারীকে ওকালতনামায় সই করতে হয়। শনিবার আলিপুর আদালতে রাজীব কুমারের জমা পড়া ওকালতনামায় সই রয়েছে তাঁরই।
সিবিআইয়ের এক কর্তা বললেন, ‘‘শহর বা শহরতলির কোথাও রয়েছেন রাজীব। যেখানে গিয়ে তাঁর আইনজীবীরা নথিতে সই করিয়ে নিচ্ছেন। অথবা, রাজীব-ঘনিষ্ঠ কোনও অফিসারকে দিয়ে তাঁর কাছে সই করানোর জন্য নথি পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।’’
যার অর্থ— সিবিআইয়ের নাকের ডগায় বসে রয়েছেন রাজীব। যা যা করণীয়, তা করে যাচ্ছেন। রাজীবের খোঁজে সিবিআই সর্বত্র চষে ফেললেও রাজীব রয়ে গিয়েছেন মেঘের আড়ালেই! তদন্তকারীদের যুক্তি ছিল, নিজের ফোনের লোকেশন আড়াল করতে বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন রাজীব। কিন্তু যে আইনজীবীরা তাঁর কাছ থেকে নথি সই করাচ্ছেন, যে অফিসারেরা তাঁকে ঘিরে আছেন, তাঁরাও কি সেই প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন?
এর উত্তর নেই সিবিআইয়ের কাছে। তারা প্রথমে মনে করেছিল, শনিবার, তাঁর আগাম জামিনের আবেদনের ওকালতনামায় রাজীবের স্ত্রী সঞ্চিতা কুমারের সই আছে। পরে দেখা যায়, রাজীবের সই রয়েছে সেখানে। তাঁদের যে রাজীব কার্যত নাকানি-চোবানি খাওয়াচ্ছেন, তা প্রকারান্তরে মেনে নিয়েছেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা।
রাজীব কোথায়, তা জানতে সিবিআই রবিবার আবার সঞ্চিতাদেবীকে জেরা করেছে। সিবিআই সূত্রের খবর, সঞ্চিতার মোবাইলও এ দিন পরীক্ষা করা হয়েছে। নতুন করে সিবিআইয়ের সামনে রাজীবকে হাজিরা দেওয়ার জন্য এ দিন আরও একটি নোটিস ধরানো হয়েছে সঞ্চিতাদেবীকে। তবে, এ বার রোজ ভ্যালি কাণ্ডে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।
রাজীবের পার্ক স্ট্রিটের বাসস্থানের সামনে এবং ভবানীভবনের দফতরের সিসিটিভি ফুটেজ গত দু’দিনে খতিয়ে দেখেছে সিবিআই। সিবিআই সূত্রের খবর, ১২ সেপ্টেম্বর রাজীবকে এই দুই জায়গায় শেষ বার দেখা গিয়েছে। রবিবার আলিপুর পুলিশ লাইন-সহ আরও কয়েকটা জায়গায় হানা দিয়েছে সিবিআই। রাজীবের ব্যক্তিগত দেহরক্ষীদের মধ্যে এক জনকে এ দিন সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে জেরা করা হয়। সিবিআই জানিয়েছে, একটি নির্দিষ্ট ট্রাভেল এজেন্সি মারফত রাজীব-সহ রাজ্যের অনেক আইপিএস অফিসার ট্রেন বা বিমানের টিকিট কাটেন। এই ব্যবসায়ীকেও এ দিন ডেকে জেরা করা হয়েছে।