(বাঁ দিকে) পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সুবীরেশ ভট্টাচার্য (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলার সাক্ষীদের উপর প্রভাব খাটানোর চেষ্টা চলছে, কলকাতা হাই কোর্টে বৃহস্পতিবার এমনটাই জানিয়েছে সিবিআই। তাদের দাবি, ২০ থেকে ২৫ জন সাক্ষীকে প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে। সেই সঙ্গে আদালতে সিবিআই জানিয়েছে, দুর্নীতির ক্ষেত্রে ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুবীরেশ ভট্টাচার্যদের মূল মন্ত্র ছিল ‘চুরিবিদ্যা মহাবিদ্যা যদি না পড়ো ধরা’। এই প্রবাদবাক্য মাথায় রেখেই তাঁরা দিনের পর দিন ক্ষমতায় অপব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ।
স্কুল সার্ভিস কমিশনে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। ওই মামলাতেই গ্রেফতার করা হয় সুবীরেশ, শান্তিপ্রসাদ সিংহের মতো শিক্ষাকর্তাদের। জামিন চেয়ে তাঁরা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল। সিবিআই জানায়, সাক্ষীদের প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে। ২০ থেকে ২৫ জন সাক্ষীকে প্রভাবিত করার চেষ্টা হয়েছে। সে বিষয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ, এই মামলায় যাঁরা অভিযুক্ত, তাঁরা জামিন পেলে পুনরায় স্বপদে বহাল হবেন এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই। তাঁরা কী ভাবে প্রভাব খাটাবেন? এই যুক্তি কি আদৌ যুক্তিসঙ্গত?
এর পর সিবিআই জানায়, নিয়োগ দুর্নীতিতে ‘চুরি বিদ্যা মহাবিদ্যা যদি না পড়ো ধরা’ নীতি অনুসরণ করেছেন পার্থ, সুবীরেশ, শান্তিপ্রসাদেরা। কেন্দ্রীয় সংস্থার আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদী বলেন, ‘‘দিনের পর দিন ওই নীতি অনুসরণ করে অভিযুক্তেরা দুর্নীতি করেছেন। অপব্যবহার করেছেন ক্ষমতার। নিজেদের রাজনৈতিক ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে দুর্নীতি করেছেন তাঁরা।’’
পার্থদের আইনজীবী পাল্টা সওয়ালে বলেন, ‘‘গত দু’বছরের বেশি সময় ধরে অভিযুক্তেরা জেলে রয়েছেন। বিচার না করে আর কত দিন তাঁদের আটকে রাখা হবে? ২০১৪ সাল থেকে সারদা মামলার তদন্ত চলছে। সিবিআইয়ের সেই তদন্ত শেষ হচ্ছে না। এই মামলার পরিণতিও সারদা মামলার মতো হবে না তো?’’ হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ও এই প্রসঙ্গ তুলেছিলেন বলে আদালতে জানান পার্থদের আইনজীবী। দু’পক্ষের সওয়াল শুনে আদালত জানায়, আগামী শুক্রবার এই মামলার বিস্তারিত শুনানি হবে।