সার্ভে পার্কের ওই ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়েছিল সিবিআই। ফাইল চিত্র
নিজের ফ্ল্যাটের উল্টোদিকের কমপ্লেক্সেই বেনামে একটি ফ্ল্যাট কিনেছিলেন শান্তিপ্রসাদ সিন্হা। মাস কয়েক আগে সেখানে তল্লাশি চালিয়েছিল সিবিআই। বুধবার নিয়োগ মামলার একটি অতিরিক্ত চার্জশিট পেশ করে তারা জানিয়েছে, ওই ফ্ল্যাটটি শান্তিপ্রসাদ কিনেছিলেন তাঁরই স্ত্রীর বান্ধবীর নামে!
বুধবার সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে শুনানি ছিল এসএসসির নিয়োগ সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান শান্তিপ্রসাদের। সেখানে নিয়োগ দুর্নীতির ২টি মামলায় শান্তিপ্রসাদ-সহ ৬জনের বিরুদ্ধে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করে সিবিআই। ওই চার্জশিটেই শান্তিপ্রসাদের ‘বেনামি’ ফ্ল্যাট সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পেশ করেছে সিবিআই। একই সঙ্গে তারা জানিয়েছে, গত মার্চে ওই ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে কী কী উদ্ধার করেছিল তারা।
শান্তিপ্রসাদের ওই ফ্ল্যাটটি সার্ভে পার্কে। সিবিআই জানিয়েছে, মার্চ মাসে এই ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে লক্ষ লক্ষ নগদ টাকা এবং দেড় কেজি সোনা উদ্ধার করেছিলেন তদন্তকারীরা। পাওয়া গিয়েছিল দেড় হাজার নামের একটি তালিকাও। চার্জশিটে সে কথা উল্লেখ করে সিবিআই জানিয়েছে, ওই ফ্ল্যাটটিও মোটা টাকা খরচ করেই কিনেছিলেন শান্তিপ্রসাদ। স্ত্রীর বান্ধবীর নামে ওই ফ্ল্যাটটি শান্তিপ্রসাদ কিনেছিলেন ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে।
প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গড়ে দেওয়া এসএসসির নিয়োগ সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন শান্তিপ্রসাদ। তাঁকে প্রথম থেকেই প্রভাবশালী বলে দাবি করেছে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির তদন্তকারী সিবিআই। অভিযোগ ছিল, সরকারি পদে শান্তিপ্রসাদের মেয়াদবৃদ্ধির জন্য তাঁর বয়স পেরিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও নিয়ম বয়সের ঊর্ধ্বসীমা সংক্রান্ত নিয়ম বদলে দেওয়া হয়। তবে এ বার চার্জশিটে তাঁকে নিয়ে নতুন তথ্য দিল সিবিআই।
বুধবার এসএসসি-র একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক এবং গ্রুপ-ডি কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় চার্জশিট পেশ করে আদালতে। এই নিয়ে গত ২ দিনে ৩টি মামলায় চার্জশিট দিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। একাদশ-দ্বাদশের নিয়োগ দুর্নীতিতে কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, অশোক সাহা, আব্দুল খালেক, শান্তিপ্রসাদ-সহ ৬জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৭ নম্বর ধারা ছাড়াও ৪২০, ১২০বি, ৪০৯ ধারায় চার্জশিট পেশ করা হয়েছে। যদিও শান্তিপ্রসাদের আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত জানান, হাইকোর্ট বা বিশেষ আদালত যখন দ্রুত তদন্ত শেষ করতে বলছে তখনই সিবিআই একটা করে সাপ্লিমেন্টরি চার্জশিট পেশ করছে। এই করে অনন্তকাল ধরে মামলা চালানো হবে।
এ ব্যাপারে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সঞ্জয় বলেন, ১ বছরে রাজ্যে ২৩টি জেলার মধ্যে ৪টি জেলায় তদন্ত হয়েছে। সব জেলায় তদন্ত করতে সে ক্ষেত্রে ৫-৭ বছর লাগবে। তবে কি আামার মক্কেল তত দিন জেলেই থাকবেন?