— প্রতীকী চিত্র।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মঙ্গলবার বেহালা, সল্টলেক-সহ কলকাতা এবং হাওড়ার ছ’টি জায়গায় তল্লাশি চালাল সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নথি উদ্ধার হয়েছে। সম্প্রতি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তার পরেই ছয় জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে নথি উদ্ধার সিবিআইয়ের।
প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট দেখে নম্বর দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ‘এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানি’ নামের একটি সংস্থাকে। সেই সংস্থারই কর্তা কৌশিক মাজিকে নিজাম প্যালেসে ডেকে পাঠিয়েছিল সিবিআই। সংস্থার কলকাতার দফতরে তাঁকে ওএমআর শিট নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। ওই সংস্থার অফিস, গুদাম, এমনকি কর্তা, কর্মীদের বাড়িতে মঙ্গলবার তল্লাশি চালিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা। সিবিআইয়ের আট জন আধিকারিক তল্লাশি চালান কর্তা কৌশিকের ফ্ল্যাটে।
এই মামলার তদন্তকারী হিসাবে সিবিআইয়ের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। টেটের ওএমআর শিট সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি ছিল তাঁর এজলাসে। মামলাকারীর অভিযোগ ছিল, ওএমআর শিটের ‘ডিজিটাইজড ডেটা’য় অনেক ভুল রয়েছে। আদালতে ওএমআর শিটের তথ্য বলে যে নথি পেশ করা হয়েছে, তা একেবারেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। কারণ, ওএমআর শিটের ডিজিটাইজড ডেটা বলতে বোঝায়, তার স্ক্যান করা কপি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে পর্ষদ আদালতে যা পেশ করেছে, তা টাইপ করা তথ্য। আর সেই তথ্যে প্রশ্ন-উত্তরের অনেক বিকল্পেও ভুল রয়েছে।
মামলাকারীর এই বক্তব্য শোনার পরই তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইকে প্রশ্ন করেন বিচারপতি। তিনি জানতে চান, কী ভাবে এই ফাঁকি থেকে গেল? এমনকি, অভিযুক্তদের যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করার দরকার ছিল, তা-ও সিবিআই করেনি বলে অভিযোগ করেন বিচারপতি। এ ব্যাপারে সিবিআইকে ভর্ৎসনা করেই বিচারপতি বলেছিলেন, ‘‘সিবিআই তো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নই করেনি। কী প্রশ্ন করবে সেটাও কি আমাকে বলে দিতে হবে? আপনাদের কাজ কি মানুষকে বোকা বানানো?... এর চেয়ে উলুবেড়িয়া থানাকে কেসটা দিলে ভাল হত!’’ সেই ভর্ৎসনার পরেই টেট পরীক্ষার ওএমআর শিট দেখার দায়িত্বে থাকা সংস্থার কর্তাকে নিজাম প্যালেসে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। এ বার চালাল তল্লাশি।