রাজীব কুমার। ফাইল চিত্র।
নবান্নের পর এ বারে ভবানী ভবন!
সিআইডি প্রধান রাজীব কুমারের ব্যাপারে জানতে চেয়ে এর আগে নবান্নে গিয়েছিলেন সিবিআইয়ের প্রতিনিধিরা। শনিবার রাজ্য পুলিশের সদর দফতরে পৌঁছলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার প্রতিনিধিরা। এর আগে উত্তরপ্রদেশের চন্দৌসিতে রাজীবের গ্রামের বাড়িতেও তল্লাশিতে যান উত্তরপ্রদেশ সিবিআইয়ের একটি দল। শনিবার পার্ক স্ট্রিটের বাড়িতে গিয়ে সিআইডি কর্তার স্ত্রীকেও জেরা করেন গোয়েন্দারা। রাজীবের খোঁজে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ ও পূজালিতে বেশ কয়েকটি রির্সটেও হানা দেন গোয়েন্দারা।
যদিও রাজীব এখনও অধরা।
শনিবার দুপুরে ভবানী ভবনের তিনতলায় এডিজি সিআইডি-র অফিসে গিয়ে রাজীবের খোঁজ করেন সিবিআই অফিসারেরা। তাঁকে সারদা তদন্তে যোগ দিতে বলে সিআইডি কর্তাদের চিঠিও ধরিয়ে আসেন তাঁরা। রাজীবের অফিসের নিরাপত্তারক্ষী, ব্যক্তিগত সচিব, অফিস পিওন ও কম্পিউটর অপারেটরকেও ঘণ্টাখানেক জিজ্ঞাসাবাদ করেন। আজ, রবিবার বেলা ১১টা নাগাদ ওই চার জনকে সিজিও কমপ্লেক্সে তলব করা হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। এ দিন রাজীব-ঘনিষ্ঠ এক ট্রাভেল এজেন্টকেও ডেকে পাঠানো হয়। তিনি দু’-এক দিনের মধ্যে হাজিরা দেবেন বলে জানিয়েছেন।
সিবিআই গোয়েন্দারা জানান, রাজীব কলকাতাতেই ‘প্রভাবশালী’ কারও আশ্রয়ে রয়েছেন। কারণ, আলিপুর আদালতে আগাম জামিনের আবেদনে তিনি নিজেই সই করেছেন। এক সময় তাঁর আইনজীবীরা স্ত্রী সঞ্চিতা কুমারকে জামিনের আবেদনে সই করানোর কথা ভেবেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রাজীবকে দিয়েই ওকালতনামায় সই করানো হয়। সিবিআইয়ের দাবি, যে প্রভাবশালীর আশ্রয়ে তিনি রয়েছেন, তাঁর ব্যাপারেও তদন্ত চলছে। তবে শনিবারের জেরাতেও রাজীবের স্ত্রী জানান, স্বামীর ব্যাপারে কিছুই জানেন না। তাঁকে হাইকোর্টের রায় বেরনোর পরের দিন পর্যন্ত শেষ বাড়ি ও অফিসে দেখা গিয়েছে।
সিবিআই এবং রাজীব কুমারের এই দড়ি টানাটানির মাঝে সিআইডি কর্তাকে খুন করা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। সিউড়িতে কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসির ১৭তম দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে গিয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে সোমেন বলেন, ‘‘যে ভাবে সিবিআইয়ের সঙ্গে রাজীব কুমারের লুকোচুরি চলছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে তিনি একটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশীদার। সেই ষড়যন্ত্র কী, রাজীব কুমার গ্রেফতার হলে বেরিয়ে আসতে পারে। আর সেই ভয়ে যাঁরা ওই ষড়যন্ত্রে জড়িত, তাঁরা তাঁকে মেরে না দেন, সেটাই চিন্তার।’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘ওই তালিকায় রয়েছে রাজ্য সরকারও। কারণ সমস্ত প্রোটোকল ভেঙে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পুলিশ কমিশনারের বাড়িতে ছুটে গিয়েছিলেন কীসের স্বার্থে!’’