কলকাতায় বিভাস অধিকারীর ফ্ল্যাটেও তল্লাশি অভিযান সিবিআইয়ের। নিজস্ব চিত্র।
বাংলার নতুন বছরের প্রথম দিনেই শিক্ষায় দুর্নীতিকাণ্ডে তৎপর সিবিআই। শনিবার বীরভূমের নলহাটির ২ নম্বর ব্লকের প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি বিভাস অধিকারীর বাড়ি, আশ্রম এবং ফ্ল্যাটে তল্লাশি অভিযান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার।
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত বিভাস। নিয়োগ দুর্নীতিতে গত বছর গ্রেফতার করা হয়েছে মানিককে। বর্তমানে তিনি জেলবন্দি। মানিকের গ্রেফতারের পর পরই তদন্তকারীদের নজরে এসেছিলেন বিভাস। তবে গত ফেব্রুয়ারি মাসে এই দুর্নীতিতে ধৃত হুগলির বলাগড়ের প্রাক্তন তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের মুখেই প্রথম বিভাসের নাম শোনা গিয়েছিল। দুর্নীতিতে বিভাস যুক্ত বলে দাবি করেছেন কুন্তল। বিভাসকে কেন তলব করা হচ্ছে না, এই প্রশ্ন তুলেছিলেন দুর্নীতিতে নাম জড়ানো গোপাল দলপতিও। শনিবার নলহাটিতে বিভাসের বাড়ি এবং আশ্রমে হানা দিল সিবিআই।
নলহাটির কৃষ্ণপুরে বিভাসের বাড়ি এবং একটি আশ্রম রয়েছে। শনিবার সকালে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে হানা দেন সিবিআই আধিকারিকরা। তল্লাশি অভিযানের সময় বাড়িতেই রয়েছেন বিভাস। নলহাটির পাশাপাশি কলকাতায় বিভাসের ফ্ল্যাটেও অভিযানে নেমেছেন তদন্তকারীরা। উত্তর কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিটে ফ্ল্যাট রয়েছে বিভাসের। শনিবার সেখানেও হানা দিয়েছে সিবিআই। এর আগে, ওই ফ্ল্যাটে হানা দিয়েছিল আরও এক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। ওই ফ্ল্যাটে তাঁর আশ্রমের অনেকে কলকাতায় এলে থাকেন বলে তখন জানিয়েছিলেন বিভাস। পরে ওই ফ্ল্যাট খুলে দিয়েছিলেন ইডির আধিকারিকরা।
দুর্নীতিতে নাম জড়ানোর পর মুখ খুলেছিলেন বিভাস। বলেছিলেন, ‘‘২০১৯ সালে আমার একটা দুর্ঘটনা হয়। তার পর থেকে আমি অসুস্থ। গোপাল দলপতিকে আমি জীবনে চিনি না। কুন্তল কিংবা দলপতির সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। কোনও দিন দেখা হয়নি। চোর-ডাকাতরা বাঁচার জন্য অনেকের নাম করেন। সেটা তাঁদের ব্যক্তিগত ব্যাপার।’’ ইডি, সিবিআই তলব করলে তিনি সব রকম সহযোগিতা করবেন বলেও সেই সময় জানিয়েছিলেন বিভাস। বিভাসের ২-৩টি বিএড কলেজ রয়েছে বলে জানা গিয়েছিল। ‘বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং অ্যাসোসিয়েশনের’ প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি। বিভাসের বাড়িতে অভিযানের মধ্যেই মুর্শিদাবাদের বড়ঞায় তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়িতেও হানা দিয়েছে সিবিআই। তাঁর বাড়ি থেকে প্রায় দু’বস্তা নথি উদ্ধার করা হয়েছে। যার মধ্যে প্রাইমারি, আপার প্রাইমারি এবং নবম-দশমের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার চাকরি প্রার্থীদের অ্যাডমিট কার্ড রয়েছে বলে সূত্রের খবর।