তৃণমূলের তরফে এই এলাকাগুলির দায়িত্ব ছিল অনুব্রত মণ্ডলেরই। প্রতীকী ছবি।
গরু পাচার মামলার তদন্তে নেমে বীরভূমের নানা পশুর হাটের তথ্য উঠে এসেছে সিবিআইয়ের হাতে। সেই সূত্রে এ বার নজর পড়ছে পূর্ব বর্ধমানের কয়েকটি হাটের দিকেও। এই জেলায় গোটা তিনেক বড় এবং দু’টি ছোট পশুর হাট রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তার মধ্যে তিনটি মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম ও গুসকরায়। তৃণমূলের তরফে এই এলাকাগুলির দায়িত্ব ছিল অনুব্রত মণ্ডলেরই। ফলে ওই হাটগুলি থেকেও গরু পাচারের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না তদন্তকারী সংস্থা।
স্থানীয় নানা সূত্রে জানা যায়, জেলার মধ্যে বড় পশুর হাট রয়েছে মঙ্গলকোটের কৈচর, কেতুগ্রামের পাচুন্দি, রায়নার সেহেরা এলাকায়। ছোট দু’টি হাট রয়েছে গলসির খেতুড়া ও গুসকরায়। এলাকাবাসীর একাংশের দীর্ঘ দিনের অভিযোগ, বড় ওই তিনটি হাট থেকে গরু পাচার হয়ে থাকে। বীরভূমের ইলামবাজার হয়ে মুর্শিদাবাদ পর্যন্ত গরু নিয়ে যায় পাইকারেরা। বড়ঞা, সালার, সাগরদিঘি হয়ে পাচার হত বলে অভিযোগ। আবার, কাটোয়ার কাছে গঙ্গা দিয়েও গরু নদিয়ায় পৌঁছত বলে দাবি। পূর্ব বর্ধমান থেকে নদিয়া হয়ে বাংলাদেশ সীমান্তে গরু পাচারের তথ্য হাতে এসেছে বলে দাবি সিবিআই সূত্রেরও।
তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে নাম থাকা এক ব্যক্তি বীরভূম, মুর্শিদাবাদ ও পূর্ব বর্ধমানে গরু পাচার চক্রের ‘সেতু’ হিসেবে কাজ করতেন। অভিযোগ, বিহার বা উত্তরপ্রদেশের গরু বড় ট্রাকে করে হাটে পৌঁছত। গরুগুলিকে সব সময় হাটে নামানো হত না। এলাকা সূত্রের দাবি, কৈচরে হাটের দিন ১৪-১৫টি, সেহেরায় ১০-১২টি এবং পাচুন্দিতে ৮-১০টি করে বড় ট্রাকে ভিন্ রাজ্যের গরু আসত। আরও দাবি: আগে খোলা বড় ট্রাকেই গরু আনা হত, এখন ৫০-৬০টি করে ছোট মালবাহী গাড়িতে গরু আনা হয় হাটে। বাঁকুড়া-সহ জঙ্গলমহল থেকেও গরু আসে পূর্ব বর্ধমানের হাটগুলিতে। সূত্রের দাবি, ২০২০ সালের পর থেকে ভিন্ রাজ্যের গরু বিক্রির রমরমায় ভাটা পড়েছে।
সিবিআইয়ের দাবি, কারা কারা এই পাচারে যুক্ত, তাঁরা অনুব্রত মণ্ডলের ‘ঘনিষ্ঠ’ কি না, এ সব বিষয়ে খোঁজ নেওয়া শুরু হয়েছে। গরুর পাশাপাশি, আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট ও কেতুগ্রামে বিভিন্ন বালি খাদানেও অনুব্রতের কতটা ‘প্রভাব’ রয়েছে, সে বিষয়েও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে বলে সিবিআই সূত্রের দাবি।