ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গে ভোট-পরবর্তী খুন-ধর্ষণের তদন্তে নেমে বৃহস্পতিবার বীরভূমের রামপুরহাট আদালতে একটি রিপোর্ট জমা দিল সিবিআই। নলহাটির বিজেপি কর্মী মনোজ জয়সওয়ালকে খুনের ঘটনায় দুই অভিযুক্ত মইনউদ্দিন শেখ ও ইমরান শেখের নামে তারা ওই রিপোর্ট পেশ করেছে বলে সিবিআই সূত্রের খবর।
সিবিআইয়ের একটি দল এ দিনই প্রেসিডেন্সি জেলে যায়। ভোট-পরবর্তী হিংসায় কলকাতার কাঁকুড়গাছির বাসিন্দা অভিজিৎ সরকার খুন হওয়ার পরে পুলিশ আট জনকে গ্রেফতার করেছিল। তাঁরা এখন প্রেসিডেন্সি জেলে আছেন। মূলত তাঁদের সঙ্গে কথা বলতেই সিবিআইয়ের দলটি সেখানে যায়। এ দিন ওই খুনের ব্যাপারে কাঁকুড়গাছির শীতলাতলা লেন, মানিকতলা মেন রোড ও গিরিশ বিদ্যাপতি রত্ন লেনের কয়েক জন প্রত্যক্ষদর্শী বাসিন্দার বয়ানও লিপিবদ্ধ করে সিবিআই। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে অভিযুক্তদের আত্মীয়দেরও।
বীরভূমের কাঁকরতলার বিজেপি কর্মী মিঠুন বাগদির হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত লক্ষ্মী বাগদির ‘ফরেন্সিক সাইকোলজিক্যাল এগ্জামিনেশন’ করাতে চেয়ে এ দিন দুবরাজপুর আদালতে যায় সিবিআই। ইতিমধ্যেই আদালতের অনুমতি নিয়ে সিউড়ি জেলে গিয়ে লক্ষ্মী-সহ ওই খুনে ধৃত তিন জনকে জেরা করেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তকারীরা। সিবিআই সূত্রের খবর, লক্ষ্মীর বক্তব্যে তদন্তকারীরা প্রচুর অসঙ্গতি পেয়েছেন। সম্ভবত সেই জন্যই ওই অভিযুক্তকে বিশেষ পদ্ধতিতে জেরা করার আবেদন জানিয়েছে সিবিআই। এ দিন সকালে বাঁকুড়ার ইন্দাসের নাড়রা গ্রামে যায় সিবিআইয়ের একটি দল। সেখানে ‘নিহত’ বিজেপি কর্মী অরূপ রুইদাসের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারীরা।
ভোটের ফল ঘোষণার পরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর থানার প্রসাদপুরেবিজেপি কর্মী হারান অধিকারী-সহ বেশ কয়েক জনের উপরে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। রাতে হাসপাতালে হারানের মৃত্যু হয়। সিবিআই এ দিন হারানের স্ত্রী স্বর্ণলতার বয়ান লিপিবদ্ধ করেছে। হামলায় আহত আট বিজেপি কর্মীর বয়ানও নেওয়া হয়েছে। পুলিশ অভিযুক্তদের আড়াল করছে বলে সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগ করেন স্বর্ণলতা। সোনারপুর থানার অফিসারদের সামনেই এই বিযাপারে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ করেন স্বর্ণলতা এবং স্থানীয় বিজেপি কর্মীরা।
গত ২০ মে নরেন্দ্রপুর থানার খেয়াদহে নিহত বিজেপি কর্মী নির্মল মণ্ডলের স্ত্রী সুপর্ণা এবং দাদা কুলদীপকেও এ দিন জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। গত রবিবারেও তাঁরা নির্মলের বাড়ি এবং ওই এলাকায় গিয়েছিলেন। স্বামীকে বাঁচাতে যাওয়ায় তাঁকে একাধিক ব্যক্তি যৌন হেনস্থা করেছিল বলে সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগ করেন সুপর্ণা। তিনি সিবিআই অফিসারদের জানান, পুলিশ তাঁর সেই অভিযোগ গ্রহণ করেনি।
সিবিআই আধিকারিকেরা এ দিনেও নন্দীগ্রামে যান। দুপুরে প্রথমে নন্দীগ্রাম থানায় বৈঠক করেন তাঁরা। সেখান থেকে যান নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের ভূমি ও ভূমিরাজস্ব অফিসে। সেখান থেকে দু’জন আমিনকে নিয়ে চিল্লগ্রাম শ্মশানে যায় সিবিআই। আমিনদের সঙ্গে নিয়ে এলাকার স্কেচ তৈরি করা হয়। তার পরে সিবিআই যায় সরবেড়িয়া ডাকঘরে। সেখানকার কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি কয়েক জন এলাকাবাসীকে আলাদা ভাবে ডেকে নিয়ে দরজা বন্ধ করে তাঁদের বক্তব্য শোনেন তদন্তকারীরা। ওখানে ডাকা হয় নিহত বিজেপি কর্মী দেবব্রত মাইতির পরিবারকেও।