— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক-পড়ুয়ার খুন, ধর্ষণের ঘটনায় নমুনা সংগ্রহ এবং ময়না তদন্তের প্রক্রিয়ার খামতি নিয়ে আগেই আঙুল তুলেছে সিবিআই। এ বার কলকাতা পুলিশের তদন্তকারীদের লেখা কেস ডায়েরির পাতাতেও কিছু ‘উদ্ভট ভুল’ দেখছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। ‘রহস্যজনক’ এই ভুলের বিষয়ে সিবিআই উচ্চ আদালতে জানাবে বলেও তদন্তকারীদের একটি সূত্রে দাবি করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, শনিবার গভীর রাতে কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তাকে ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ে এই ঘটনা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
সিবিআইয়ের এক কর্তা বলেন, “তদন্তের বিভিন্ন ধাপে যা ভুল, তা কলকাতা পুলিশের সিটের সদস্যদের নজরদারিতে ঘটেছে বলে বিশ্বাস করা শক্ত। যাঁরা এই ভুল করেছেন, তাঁদের বিষয়ে পুলিশে সাধারণত বিভাগীয় পদক্ষেপ হয়ে থাকে। যা অবস্থা, তাতে কেস ডায়েরি আগাগোড়া নতুন করে লেখা গেলে ভাল হত।” তদন্তকারীদের একটি সূত্রে দাবি, কলকাতা পুলিশের তদন্তের ভুলগুলি বিভ্রান্তিকর। এত গুরুতর তদন্তের ক্ষেত্রে আনাড়ি মার্কা এমন ভুল দেখে সিবিআই কর্তাদের একাংশের সন্দেহ, তবে কি কিছু আড়াল করার জন্যই এমন সুচারু ভাবে ভুলগুলি সম্পন্ন হয়েছে?
৯ অগস্ট সকালে আর জি করের ঘটনাটি জানাজানি হয়। ১৩ অগস্ট হাই কোর্টের নির্দেশে তদন্তভার নেয় সিবিআই। সিবিআই তদন্তভার নিলেও পরে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল দাবি করেন, কলকাতা পুলিশ ত্রুটিহীন ভাবে তদন্ত চালিয়েছে। কিন্তু সিবিআইয়ের প্রশ্ন, এত দিন ‘কার ইন্ধনে’, কী ভাবে কলকাতা পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছিল? সিবিআইয়ের এক কর্তা বলেন, ‘‘কলকাতা পুলিশের সিট এবং টালা থানার অফিসারদের সঙ্গে তদন্তের পর্বে কাদের যোগাযোগ ছিল, কেউ তদন্ত প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন কি না, তা জানা জরুরি। ৯ অগস্ট সকাল থেকে ১৩ অগস্ট রাত পর্যন্ত ওই পুলিশ আধিকারিকদের ‘কল ডিটেলস’ দেখা হয়েছে। সরকারি ফোন ছাড়া অন্য কোনও ফোন তাঁরা ব্যবহার করেন কি না, তা দেখা হচ্ছে। কোনও ব্যক্তিগত ফোন ওই সময় কেউ ব্যবহার করেছিলেন কি না তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ ফোনের বিষয়ে কয়েকটি সূত্র হাতে এসেছে বলেও তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি। একটি বিদেশি সিম থেকে প্রভাবশালী কেউ ফোন করেন বলেও সূত্রটির দাবি।
সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে কলকাতা পুলিশের আধিকারিকদের অনেককেই ‘আড়ষ্ট’ মনে হয়েছে। আর জি করের ঘটনাটির তদন্তের প্রাথমিক পর্বে কোনও রাজনৈতিক চাপ থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলে তদন্তকারীদের একাংশের দাবি। নিহত চিকিৎসকের ময়না তদন্তকারী চিকিৎসকদেরও ডেকে একাধিক বার কথা বলেছে সিবিআই। তাঁদের জবাবও ‘সন্তোষজনক নয়’ বলে তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি। সিবিআইয়ের এক কর্তা বলেন, ‘‘তদন্তের খামতি নির্দিষ্ট ‘পয়েন্ট’ ধরে শীর্ষ আদালতে মুখবন্ধ রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে।”