ছবি: সংগৃহীত।
বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থা সারদার আর্থিক কেলেঙ্কারি নিয়ে তদন্ত চলছে দীর্ঘ পাঁচ বছর ন’মাস ধরে। অভিযুক্ত থেকে ভুক্তভোগী— সকলেই যখন মনে করছেন সিবিআই এ বার সারদা মামলা গুটিয়ে আনবে, ঠিক তখনই নতুন করে রাজ্যের দায়ের করা মামলা নিতে চাইল ওই কেন্দ্রীয় সংস্থা।
সম্প্রতি ঘাটাল আদালত থেকে রাজ্যের একটি মামলাকে আলিপুর আদালতে পাঠাতে অনুরোধ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, রাজ্যের এই মামলাকে সারদা নিয়ে সিবিআইয়ের প্রধান মামলা আরসি৪ (রেগুলার কেস)-এর অন্তর্ভুক্ত করা হবে। মনে করা হচ্ছে, ঘাটাল ছাড়াও রাজ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অন্য মামলাকে মূল মামলার অন্তর্ভুক্ত করতে পারে সিবিআই। আরসি৪ মামলায় তারা মূল চার্জশিট জমা দিয়েছে আদালতে। অতিরিক্ত ছ’টি চার্জশিটও পেশ করা হয়েছে। তার পরেও তদন্ত চালিয়ে যেতে আদালতের অনুমতি চেয়ে রেখেছে সিবিআই।
সুপ্রিম কোর্ট ২০১৪ সালের ৯ মে যখন সিবিআই-কে সারদা-সহ বিভিন্ন লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্তে নামার নির্দেশ দেয়, তখন রাজ্যের হাতে শতাধিক মামলা ছিল। সিবিআই সেই সব মামলা থেকে কয়েকটি বেছে নিয়ে তিন ভাগে ভাগ করে তিনটি মামলা শুরু করেছিল। আরসি৪-এ ছিল ৫৮টি মামলা। বেশ কিছু মামলা যোগ করে আরসি৫ এবং আরসি৬-এর তদন্ত শুরু হয়। বাকি মামলাগুলি রাজ্যের বিভিন্ন আদালতে চলছিল।
আরও পড়ুন: ভোট-তৎপরতায় ‘ঘাটতি’ কি কমিশনেই?
সিবিআইয়ের তিনটি মামলার মধ্যে মূল মামলা আরসি৪ ছিল সারদা রিয়েলটি সংস্থার বিরুদ্ধে। সেই মামলায় সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন, অন্যতম কর্ত্রী দেবযানী মুখোপাধ্যায় ছাড়াও ছিল মনোজ নেগেল, অরবিন্দ চৌহান, সোমনাথ দত্ত ও কুণাল ঘোষের নাম। সিবিআইয়ের তরফে ঘাটাল আদালতে আবেদনে বলা হয়েছে, তারা নতুন কোনও মামলা করছে না। রাজ্যের যে-সব মামলা এখনও তারা ছুঁয়ে দেখেনি, সেগুলিকে নিজেদের মামলার ভিতরে ঢোকানো হচ্ছে বলে সিবিআই সূত্রের খবর।
আদালতে সিবিআইয়ের আবেদনে বলা হয়েছে, সারদা রিয়েলটি নিয়ে আরসি৪ মামলায় সারদার বিরুদ্ধে ৭৭৪ কোটি ৩৩ লক্ষ ৫৯ হাজার ৯২৯ টাকা তোলার অভিযোগ রয়েছে। তার মধ্যে ৫৬৯ কোটি ২৬ লক্ষ ২৮ হাজার ৯৫ টাকা আমানতকারীদের ফেরত দেওয়া হয়নি।
ঘাটালের যে-মামলাটি সিবিআই এ বার নিতে চাইছে, শ্যামাপদ মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি সেটি দায়ের করেন ২০১৩ সালের ২ ডিসেম্বর। সিবিআই তদন্তের পাশাপাশি রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ওই মামলা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সেই জন্য ওই মামলাতেও সুদীপ্ত-দেবযানীদের ঘাটালে গিয়ে আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছিল। এ বার ঘাটাল আদালত ওই মামলা আলিপুর আদালতে পাঠালে সুদীপ্তদের আর ঘাটাল পর্যন্ত ছুটতে হবে না বলে মনে করছে সিবিআই।