—ফাইল চিত্র।
এ বার ফোন করে তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেকে পাঠাল সিবিআই। আগামী দু’দিনের মধ্যে সিজিও কমপ্লেক্সে কেন্দ্রীয় ওই গোয়েন্দা সংস্থার দফতরে তাঁকে হাজিরা দেওয়ার নোটিস পাঠানো হয়েছে। সোমবার সুদীপবাবুর অফিস এবং বাড়িতে ফ্যাক্স ও ইমেল মারফত ওই নির্দেশের কথা জানানো হয়। এমনকী, এ দিন দুপুরে তৃণমূল সাংসদকে সিবিআইয়ের তরফে তিন বার ফোন করেও হাজিরা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
সুদীপবাবুকে ডেকে পাঠানোর ঘটনায় ক্ষুব্ধ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি কাজে এ দিন তিনি বাঁকুড়ার মুকুট মণিপুরে ছিলেন। সেখান থেকেই টুইট করে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিকেল চারটে নাগাদ করা ওই টুইট বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘বিজেপি কেন প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে? সিবিআই আমাদের লোকসভার দলনেতাকে তিন বার ফোন করেছে। কিন্তু, এ সব করে বিমুদ্রাকরণের বিরুদ্ধে আন্দোলন থেকে আমাদের সরানো যাবে না।’
আরও পড়ুন
ভারতীর নামে টাকা সরানোর অভিযোগে মামলা হাইকোর্টে
গত মাসের মাঝামাঝি রোজভ্যালি কাণ্ডে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নোটিস পাঠায় সিবিআই। কিন্তু, লোকসভার শীতকালীন অধিবেশন চলছিল বলে তিনি হাজিরা দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। গত শুক্রবার লোকসভার সেই অধিবেশন শেষ হয়েছে। তার পর আর এক মুহূর্তও দেরি করেনি সিবিআই। তড়িঘড়ি ডেকে পাঠানো হয় সুদীপবাবুকে। মুখ্যমন্ত্রীর মতো তিনিও এই ঘটনাকে বিজেপি-র প্রতিহিংসামূলক রাজনীতি হিসাবেই দেখছেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে, সিবিআই দফতরে হাজিরা দেবেন কি না তা দলের সঙ্গে কথা বলেই ঠিক করবেন লোকসভায় তৃণমূল দলনেতা।
মুখ্যমন্ত্রীর সেই টুইট।
নোট বাতিলের বিরোধিতায় গত নভেম্বরের ১২ তারিখে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি মোদী সরকারকে তুলোধোনা করেন। সেই সময় তাঁর পাশে বসে ছিলেন সুদীপবাবু। ঠিক তখনই সুদীপবাবুর মোবাইলে একটি টেক্সট মেসেজ আসে। তখন তিনি তা খেয়াল করেননি। পরে সাংবাদিক বৈঠক শেষ হতে তিনি মেসেজটি দেখেন। সিবিআই ইন্সপেক্টর বি ঘোষালের পাঠানো ওই টেক্সট মেসেজে লেখা ছিল, ‘‘দয়া করে আপনার ই-মেল অ্যাডড্রেসটা পাঠান। একটা নোটিস পাঠানোর আছে।’’ সঙ্গে সঙ্গেই মমতাকে ওই টেক্সট মেসেজটি দেখিয়েছিলেন সুদীপবাবু। ঘনিষ্ঠ মহলে মমতা তখনও বিজেপি-র বিরুদ্ধে ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি’র অভিযোগ করেছিলেন।
শুধু সুদীপবাবু নয়, ওই সময় তৃণমূলের আর এক সাংসদ শতাব্দী রায়কেও নোটিস পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ওই গোয়েন্দা সংস্থা। সিবিআইয়ের সূত্রের মতে, এই দুই নেতা ছাড়াও সারদা ও রোজ ভ্যালি কাণ্ডে তৃণমূলের আরও কিছু রাঘব বোয়াল নেতার বিরুদ্ধে তাঁদের কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও নথি রয়েছে। তাঁদেরও সিবিআই দফতরে তলব করা হতে পারে।