—প্রতীকী ছবি।
গরু পাচার কাণ্ডে অভিযুক্ত এনামুল শেখের সঙ্গে বীরভূমের এক তৃণমূল নেতার ‘জোরদার ব্যবসায়িক লেনদেন’ ছিল বলে প্রাথমিক সন্দেহ করছে সিবিআই। তাদের দাবি, এনামুলের ফোনের সূত্র ধরে একটি নাম পেয়েছে তারা এবং ওই নম্বরধারীর নাম-পরিচয় ও সেই নেতার নাম-পরিচয়ে মিল থাকায় এই সন্দেহ ঘনীভূত হয়েছে। এই ‘যোগাযোগ’ কতটা নিবিড় এবং কী ধরনের ব্যবসায় দু’জনের যোগাযোগ ছিল, তা বুঝতে প্রয়োজনে ওই নেতাকে ডেকে জানতে চাওয়া হতে পারে বলে সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন।
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, এনামুলের উপর সিবিআই বহু আগে থেকেই নজরদারি চালাচ্ছিল। ২০১৭-এর নভেম্বর নাগাদ মুর্শিদাবাদের এক ব্যবসায়ী বীরভূমে ১০ কোটি টাকার একটি কাজ পেতে এনামুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ওই ব্যবসায়ী এনামুলকে ফোন করতেন। এনামুল ২০১৭ সালের ২৯ নভেম্বর মুর্শিদাবাদের ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে এক ব্যক্তির কথা বলিয়ে দেন। সিবিআইয়ের দাবি, যে নম্বরে ওই ব্যবসায়ী ফোন করেছিলেন, দেখা যায় সেই নম্বরের অধিকারী এবং ওই নেতার নাম এক। সিবিআইয়ের দাবি, এর পর ওই ব্যবসায়ীকে নিয়ে এনামুল বেশ কয়েক বার বোলপুরে গিয়েছিলেন এবং ঘটনাচক্রে ১০ কোটির কাজও পেয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী।
সিবিআইয়ের ওই তদন্তকারীদের দাবি, এনামুলের কোনও কারবারে পুলিশ বাধা দিয়েছিল। তদন্তকারীদের দাবি, এনামুলের ‘ঘনিষ্ঠ শাগরেদ’ হিঙ্গোল বীরভূমের তৎকালীন এক পুলিশকর্তার সঙ্গে ‘মাসিক ৩০ লক্ষ টাকায় রফা করেন’ এবং এনামুলকে জানান, রফা হয়ে গিয়েছে ও লাইন খুলে যাবে। ফোন রেকর্ড দেখে তদন্তকারীদের দাবি, জবাবে এনামুল জানান— বীরভূমের ওই নেতার সঙ্গে রফা না হলে লাইন ফের বন্ধ হয়ে যাবে। এর পর এনামুল ওই বিশেষ নম্বরে ফোন করে ‘লাইন খোলার’ ব্যবস্থা করে বলে সিবিআইয়ের দাবি।
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, বীরভূমে ইলামবাজার, সাঁইথিয়া এবং মুরারইয়ে তিনটি গরুর হাট বসে। খয়রাশোল অঞ্চলে কয়লা খনি থেকে বেআইনি কয়লা তোলার কারবারও চলে। সেই কারণে গরু ও কয়লা পাচারের চাঁইরা বীরভূমে সক্রিয়। তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের যোগাযোগ কেমন ছিল, তা জানতে বীরভূমের আরও কয়েক জন নেতাকে ডাকা হতে পারে বলেও সিবিআইয়ের দাবি।