কুমাড্ডায় টোটোর ছবি তুলছেন সিবিআই আধিকারিক। নিজস্ব চিত্র।
টোটো এবং বাইকে করে বগটুইয়ে বোমা ও জ্বালানি আনা হয়েছিল বলে অভিযোগ সামনে এসেছিল আগেই। এ বার সেই বগটুই লাগোয়া কুমাড্ডা গ্রামের তিনটি টোটো এবং একটি মোটরবাইক এখন সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের নজরে।
স্বজনহারা শেখলাল শেখ, মিহিলাল শেখদের কাছ থেকে সিবিআই তদন্তকারী দল জানতে পেরেছিল, ২১ মার্চ রাতে তাণ্ডব ও হত্যার পরের দিন দেখা যায়, বগটুই লাগোয়া কুমাড্ডা গ্রামে শেখলালের মেয়ে সাজিনা খাতুনের শ্বশুরবাড়ির সামনে কে বা কারা দু’টি টোটো রেখে দিয়ে চলে গিয়েছে। আর একটি টোটো এবং একটি বাইক রাখা ছিল পড়শি সাইবার শেখের বাড়ির পিছন দিকে। ঘটনার বারো দিন পরেও তিনটি টোটো ও বাইক একই জায়গায় পড়ে আছে। শনিবার দুপুরে সিবিআই সোজা চলে যায় কুমাড্ডায়। সাজিনার শ্বশুরবাড়িতেই এখন রয়েছেন শেখলাল, মিহিলালেরা। এ দিন ৪৫ মিনিটের বেশি সময় সিবিআই তাঁদের সঙ্গে কথা বলে।
পরে শেখলাল, মিহিলাল দুই ভাইকে সঙ্গে নিয়ে সিবিআই যায় সাইবার শেখের বাড়িতে। সাইবার সদ্য মারা গিয়েছেন। তাঁর বৌমা বলেন, ‘‘২২ তারিখ সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি, বাড়ির উঠোনে একটা টোটো, একটা বাইক রাখা আছে। কে বা কারা কখন রাখল, আমরা কিছুই জানি না।’’ গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, টোটোর মালিক রানা শেখ ও তাঁর শ্বশুর মিলন শেখ। বাইকটিও রানা শেখের। ২১ মার্চের পরের দিন থেকে শ্বশুর-জামাই বেপাত্তা বলেও জানা যাচ্ছে। সিবিআই তদন্তকারী দল শেখলাল, মিহিলালদের সঙ্গে নিয়ে কুমাড্ডা গ্রাম থেকে বেরিয়ে আসার সময় টোটো, বাইকের ছবি তোলে।
যেখান থেকে সাত জনের দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়েছিল, বগটুই গ্রামের পূর্বপাড়ায় সেই সোনা শেখের বাড়িতেও এ দিন দুপুরে যান সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। পাশের বাড়ির আরবজান বিবি নামে এক বৃদ্ধার কাছে তাঁরা জানতে চান, ২১ মার্চ রাতে তিনি কিছু দেখেছেন কি না। তদন্তকারী দল সেখান থেকে চলে যাওয়ার পরে আরবজান বলেন, ‘‘পাশের বাড়িতে খুব বোমা পড়ছিল। বোমাবাজির শব্দ শুনেই আমি, আমার মেয়ে আর পরিবারের বাকিরা দরজা জানলা বন্ধ করে দিয়ে ঘরের
ভিতরে ছিলাম।’’
এ দিনও সিবিআই তদন্তকারী দল সোনা শেখের বাড়ি থেকে প্রায় তিনশো মিটার বেশি দূরত্বে ইদগাহ সংলগ্ন শেখলাল, নেকলাল, মিনারুল শেখদের পুড়ে যাওয়া বাড়ির ভিতরে এক ঘণ্টারও বেশি তল্লাশি চালায়। এ দিনও সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবিরে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা আনারুল হোসেন-সহ ৫ জনকে জেরার জন্য নিয়ে আসা হয়।