ফাইল ছবি।
২০১৮ সালের একটি মামলায় কলকাতা পুরসভার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। হেরিটেজ ত্রিপুরা ভবনের একাংশে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় বৃহস্পতিবার বিচারপতি অমৃতা সিন্হা এই নির্দেশ দেন। ঘটনাচক্রে, সেই সময় কলকাতা পুরসভার মেয়র ছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। পাশাপাশি কলকাতা পুরসভাকে ২২ কোটি টাকা জমা রাখারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ২০ জুনের মধ্যে আদালতে রিপোর্ট পেশ করতে হবে সিবিআইকে।
বালিগঞ্জ হেরিজেট জোনে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অমৃতা সিন্হা। কী ভাবে পুরসভা ও হেরিটেজ কনসার্ভেশন কমিটি নির্মাণের অনুমতি দিল, তা তদন্ত করে সিবিআইকে ২০ জুনের মধ্যে আদালতে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। আর্থিক দুর্নীতি ছিল কি না, তা-ও সিবিআইকে খতিয়ে দেখতে হবে।
প্রসঙ্গত, ইদানীং রাজনীতির বৃত্তে দেখা না গেলেও, শোভন একদা সামলিয়েছেন রাজ্যের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দফতরের মন্ত্রিত্ব। ১৯৮৫ থেকে কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর। ২০১৬-য় স্থান পান রাজ্য মন্ত্রিসভায়। শোভনই দেশের কোনও শহরের প্রথম মেয়র, যিনি ওই পদে থাকাকালীন জেড-প্লাস স্তরের নিরাপত্তা পেয়েছিলেন। তৃণমূল তাঁকে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় দলের দায়িত্বও দিয়েছিল। সর্বোপরি, ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত বিশ্বাসভাজন। ২০১০ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত কলকাতার মহানাগরিক পদে ছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। সেই পদে ইস্তফা দেন তিনি। ক্রমশ তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে বাড়তে তিনি গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন। ২০১৯-এর ২২ নভেম্বর শোভন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। কিন্তু শোভনের গেরুয়াসঙ্গ সুখকর হয়নি। প্রার্থীপদ নিয়ে অসন্তোষের পর ২০২১-এর ১৪ মার্চ বিজেপিও ছাড়েন তিনি। শোভনের এমন আচমকা রাজনীতিকে বিদায় জানানোর পিছনে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপড়েনকে দায়ী করেন অনেকে। আপাতত রাজনীতি থেকে শোভনের দূরত্ব বিস্তর। কিন্তু তিনি কলকাতার মেয়র থাকাকালীন তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়েই এ বার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিন্হা। তবে নির্দেশনামায় নির্দিষ্ট করে শোভনের নাম লেখা নেই। কিন্তু যে সময়ের কথা বলা হয়েছে, সেই সময় শোভনই ছিলেন কলকাতার মেয়র।