—ফাইল চিত্র।
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা ও নয়াদিল্লি
বাঁশদ্রোণীর এক ব্যবসায়ী এবং দক্ষিণবঙ্গের অন্য এক ব্যবসায়ী কয়লা পাচার চক্রের টাকা প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছে দিতেন বলে অভিযোগ। তাঁদের মধ্যে বাঁশদ্রোণীর ব্যবসায়ীর বাড়িতে আগেই হানা দিয়েছিল সিবিআই। এ বার কয়লা পাচার কাণ্ডে অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালার ঘনিষ্ঠ দক্ষিণবঙ্গের ওই ব্যবসায়ীকে শিলিগুড়ির এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে কলকাতায় নিয়ে এল তারা। সোমবার সকাল থেকে ওই ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে সিবিআই সূত্রের খবর।
এ দিনই সুপ্রিম কোর্টে লালার জামিন নিয়ে আপত্তি তুলেছে ইস্টার্ন কোল্ডফিল্ড লিমিটেড (ইসিএল)। ইসিএল-এর আইনজীবী হরিশ সালভের যুক্তি, “আমরাই এ ক্ষেত্রে ডিফ্যাক্টো অভিযোগকারী। আমরা মামলায় যুক্ত হতে চাই। কারণ অভিযুক্ত তদন্ত এড়াতে চাইছেন।” লালার আইনজীবীরা শুনানি পিছিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় তাঁর জন্য অন্তর্বর্তী সুরাহা বা গ্রেফতারি এড়ানোর নির্দেশের আর্জি জানান। বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহে ১০ মার্চ শুনানি হবে।
গত সপ্তাহে কয়লা কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের বিরোধিতা করে ও গ্রেফতারি এড়াতে লালা সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন। তাঁর যুক্তি ছিল, রাজ্য সরকারের অনুমতি ছাড়া সিবিআই রেলের এলাকায় কয়লা পাচারের তদন্ত করতে পারে না। হাইকোর্টের বিচারপতি প্রথমে লালার এই আবেদন মেনে নিলেও ডিভিশন বেঞ্চ সেই রায় বদলে দেয়। তার পরেই লালার হয়ে আইনজীবী মুকুল রোহতগি সুপ্রিম কোর্টে ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেন।
এ দিকে শিলিগুড়ি থেকে নিয়ে আসা ব্যবসায়ী প্রসঙ্গে সিবিআইয়ের অভিযোগ, প্রতি সপ্তাহে তাঁর মারফত বেশ কয়েক কোটি টাকা হাতবদল হয়ে নানা স্তরের প্রভাবশালী লোক জনের কাছে পৌঁছে যেত। কোন কোন প্রভাবশালী ও পুলিশকর্তার কাছে তিনি টাকা পৌঁছে দিতেন, ওই ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁদের নামের তালিকা করছে সিবিআই। সিবিআই-কর্তারা জানান, বাঁশদ্রোণীর ব্যবসায়ীর অফিস থেকে বাজেয়াপ্ত করা নথিপত্রে পাওয়া তথ্য থেকেও কয়েক জন প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং পুলিশকর্তার নাম জানা গিয়েছে। তাঁদের বিষয়েও খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়েছে। সিবিআইয়ের পাশাপাশি কয়লা কাণ্ডে লভ্যাংশের টাকা পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে ২৬ জন ব্যবসায়ীকে তাঁরা শনাক্ত করেছেন বলে জানান এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-র কর্তারাও। তাঁরা জানান, ইতিমধ্যেই এই ধরনের ১২ জন ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
এ দিকে, গরু পাচার কাণ্ডে অভিযুক্ত এনামুল হককে এ দিন আসানসোলে বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলা হয়। অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী অনুপস্থিত থাকায় সওয়াল-জবাব হয়নি। বিচারক জয়শ্রী বন্দ্যোপাধ্যায় ১৫ মার্চ পর্যন্ত এনামুলকে ফের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।