স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানা।
দুই কর্তার দ্বৈরথে কোন পথে এগোবে নারদ-তদন্ত?
সিবিআই সূত্রের খবর, প্রায় ১৫ দিন আগে ওই গোপন ক্যামেরা অভিযানের তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্টের কপি পাঠিয়ে দিল্লির সদর দফতর থেকে নির্দেশ চাওয়া হয়েছিল। স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানার কাছেই ওই রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, স্পেশাল ডিরেক্টর সুপারিশ করে পাঠান ডিরেক্টরের কাছে। সেই সুপারিশ বিবেচনা করে মূল নির্দেশ জারি করার কথা ডিরেক্টর অলোক বর্মার। তেমন নির্দেশ এখনও আসেনি বলেই তদন্তকারীরা জানিয়েছেন। তাঁদের একাংশের আশঙ্কা, বর্মা-আস্থানা বিরোধ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পরর্বতী নির্দেশের অপেক্ষায় থাকতে হতে পারে। এমনকি, ওই দুই শীর্ষ আধিকারিকের এক জন সরে গেলে নতুন আধিকারিককে আবার পুরো ঘটনা জানাতে হবে।
ফরেন্সিক রিপোর্ট অনুযায়ী নারদ কাণ্ডের ভিডিয়ো ফুটেজ সঠিক বলে জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট ২০১৪ সালে সিবিআইকে তদন্ত করার নির্দেশ দেয়। অভিযোগ, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, ডেপুটি মেয়র ইকবাল আহমেদ, সাংসদ সুলতান আহমেদ, সৌগত রায়, অপরূপা পোদ্দার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, মুকুল রায়, মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী, ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র ও আইপিএস অফিসার এসএমএস মির্জা ম্যাথু স্যামুয়েলের থেকে টাকা নিয়েছিলেন। সেই সময়ে ম্যাথু নিজেকে সন্তোষ সঙ্করণ নামে পরিচয় দেন। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে সেই ভিডিয়ো প্রকাশিত হয়।
সিবিআইয়ের এক কর্তা জানান, নারদ তদন্তে প্রথম ধাপে ১২ জন মন্ত্রী, নেতা, সাংসদ ও আমলাকে জিজ্ঞাসাবাদ সম্পূর্ণ হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে ছিল ভিডিয়োয় দেখা দৃশ্যের পুনর্গঠন। ম্যাথু যে সব জায়গায় গিয়ে টাকা দিয়েছিলেন বলে প্রকাশিত ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, ওই
সব জায়গায় তদন্তকারীরা অভিযুক্তদের সঙ্গে নিয়ে ঘটনার পুনর্গঠন করেন। শুধু প্রাক্তন সাংসদ মুকুল রায়ের অফিস এবং তৎকালীন পুলিশ সুপার মির্জার বর্ধমানের অফিসে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা যায়নি। কারণ, নারদ কাণ্ডের পর ভবানীপুরের ওই ভাড়ার ফ্ল্যাট ছেড়ে দেন মুকুলবাবু। বর্ধমান জেলার পুলিশ সুপারের পদ থেকে বদলি হয়ে যান মির্জা। সিবিআই সূত্রে খবর, তদন্তের তৃতীয় ধাপে ছিল ম্যাথু ও নারদ কাণ্ডে অভিযুক্তদের মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ। তবে ম্যাথু জানান, কলকাতায় বসে বাকি ১১ জন অভিযুক্তের (তদন্ত চলাকালীন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান সাংসদ সুলতান আহমেদ) সামনে বসে জিজ্ঞাসাবাদে যে সময় লাগবে, তা তিনি দিতে পারবেন না। মঙ্গলবার ফোনে তিনি বলেন, ‘‘আমি পেশায় সাংবাদিক। দীর্ঘ দিন ধরে একটি ঘটনার তদন্তের স্বার্থে সময় দেওয়া সম্ভব নয়। আমি দিল্লির বাসিন্দা। সেখানে অভিযুক্তদের ডেকে পাঠানো হোক। যাব।’’