তৃণমূলের বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। —ফাইল চিত্র।
নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় তৃণমূলের বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিল সিবিআই। সূত্রের খবর, শুক্রবার বিকেলে আলিপুরের বিশেষ সিবিআই বিশেষ আদালতে সিবিআই অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দিয়েছে। সেই চার্জশিটেই অভিযুক্ত হিসাবে জীবনকৃষ্ণের নাম আছে। তিনি ছাড়াও সুব্রত সামন্ত নামে আরও এক ধৃতেরও নাম আছে ওই চার্জশিটে। জীবন এবং সুব্রত, দু’জনেই বর্তমানে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেল হেফাজতে আছেন। আদালতে ৩০ পাতার ওই চার্জশিট জমা পড়লেও শনিবার পর্যন্ত বিচারক তা গ্রহণ করেননি।
সিবিআই সূত্রের খবর, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত জীবনকৃষ্ণ এবং সুব্রতের বিরুদ্ধে জালিয়াতি, তথ্যপ্রমাণ লোপাট এবং দুর্নীতিদমন আইনের ধারায় চার্জশিট পেশ করা হয়েছে। যদিও গ্রেফতারের পর থেকে জীবনকৃষ্ণ বারবার দাবি করেছেন যে তিনি কোনও চাকরি বিক্রি করেননি। তদন্তে তার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ মিলবে না বলেও দাবি করেন তিনি। চার্জশিটে নাম থাকা আরেক অভিযুক্ত সুব্রত নিয়োগ দুর্নীতি চক্রের এজেন্ট বলে সিবিআই সূত্রের দাবি।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এপ্রিলের মাঝামাঝি তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। জিজ্ঞাসাবাদের ফাঁকে বিধায়ক নিজের দু’টি মোবাইল বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে দেন। পাম্প এনে জল সেঁচে, শ্রমিক নামিয়ে কাদা ঘেঁটে মোবাইল ফোনগুলি উদ্ধার করেন তদন্তকারীরা। গ্রেফতারও করা হয় শাসক দলের বিধায়ককে। উদ্ধারের পরে ফোনগুলি কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছিল। ওই ফোনগুলি থেকে আদৌ কোনও তথ্য উদ্ধার করা যাবে কি না, তা নিয়ে ধন্দ থাকলেও ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা তথ্য উদ্ধার করে দিয়েছিলেন। সেই তথ্য নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ বলেও দাবি করেছিলেন তদন্তকারী অফিসারেরা। ফোন জলে ফেলে দেওয়ার জন্যই বিধায়কের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের ধারা যুক্ত হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রের খবর।
সিবিআই সূত্রের খবর, এ নিয়ে আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে নিয়োগ দুর্নীতির পাঁচটি মামলার দশটি চার্জশিট জমা পড়েছে। তার মধ্যে পাঁচটি মূল এবং পাঁচটি অতিরিক্ত বা সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট। তার মধ্যে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিতে কুন্তল ঘোষ, তাপস মণ্ডল, নীলাদ্রি ঘোষের বিরুদ্ধে জমা দেওয়া চার্জশিটই শুধু গ্রহণ করেছে আদালত।