সুশান্ত দত্তগুপ্ত।— ফাইল চিত্র
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে থাকাকালীন সুশান্ত দত্তগুপ্তের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। আজ সিবিআই সুশান্তর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করল। আর্থিক অনিয়মের এই অভিযোগের জন্যই সুশান্তকে ২০১৬-য় উপাচার্য পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়।
কৃতী বিজ্ঞানী সুশান্তর বিরুদ্ধে বিশ্বভারতীতে মূলত তিনটি আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। এক, তিনি বিশ্বভারতীতে নিযুক্ত হওয়ার আগে দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। সেই সুবাদে তিনি বিশ্বভারতী থেকে বেতনের পাশাপাশি জেএনইউ থেকেও পেনশন নিচ্ছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী, তাঁর পেনশনের অঙ্ক বেতন থেকে বাদ যাওয়ার কথা। কিন্তু তিনি পেনশন পাওয়ার কথা বিশ্বভারতীকে জানাননি বলে অভিযোগ। এর ফলে তাঁর বিশ্বভারতী থেকে প্রায় ১৩ লক্ষ টাকা বাড়তি আয় হয়েছিল। দুই, তিনি বিশ্বভারতীয় হয়ে মামলা লড়ার জন্য একটি বেসরকারি আইনি সংস্থাকে নিয়োগ করেন। সরকারি আইনজীবীদের থেকে সেই সংস্থাকে অনেক বেশি ফি পাইয়ে দেন। তিন, তিনি নিয়ম ভেঙে এক জন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে বিভাগীয় তদন্ত চালানোর জন্য ৫ লক্ষ টাকা পাইয়ে দেন। এ ছাড়াও বিধি ভেঙে নিয়োগ, মদ্যপানের ব্যক্তিগত বিল বিশ্ববিদ্যালয় তহবিল থেকে মেটানোর অভিযোগও ওঠে।
সিবিআই সূত্রের বক্তব্য, দু’বছর আগে দত্তগুপ্তের বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্ত শুরু হয়েছিল। তাতে পাওয়া তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতেই বুধবার মামলা দায়ের হয়েছে। উপাচার্য থাকাকালীন সুশান্তর বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়ে কেন্দ্রীয় সরকার একটি তিন সদস্যের তথ্য অনুসন্ধান কমিটি তৈরি করেছিল। কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতেই মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক তাঁকে বরখাস্ত করার সুপারিশ করে। রাষ্ট্রপতি সেই সুপারিশেই সিলমোহর দেন। বরখাস্ত হওয়ার পরে অবশ্য সুশান্ত দাবি করেছিলেন, পুরোটাই সাজানো ছিল। ওই কমিটি তাঁর কথা শোনেনি।
এই বিষয়ে সুশান্ত দত্তগুপ্তের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ইতিপূর্বে কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই যে তদন্ত করছিল, তা বছর দুয়েক পর কোর্টের সিদ্ধান্তে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে কোনও চার্জশিট হয়নি। তবে, এ দিনের এফআইআর সম্পর্কে তিনি এখনও কিছু জানেন না। সুশান্ত বলেন, “সিবিআই-এর তরফে আমাকে এখনও কিছু জানানো হয়নি। ঠিক কোন অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর হয়েছে, তা-ও জানি না।”