ফাইল চিত্র।
পুলিশ এবং রাজ্যের শাসক দলের ভয়ে আগে অনেকেই ‘মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন’। তবে তাঁদের অনেকেই ভোট-পরবর্তী হিংসায় কাঁকুড়গাছির অভিজিৎ সরকারের হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী হিসেবে এখন বয়ান দিচ্ছেন বলে সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের দাবি। তাঁরা জানাচ্ছেন, বেশ কয়েকটি ভিডিয়োয় ওই সব ‘প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী’র হদিস মিলেছে। অভিজিতের কিছু প্রতিবেশীর বয়ান নথিভুক্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে কাঁকুড়গাছি এলাকায় ঘুরে তাঁরা এই ধরনের অন্তত ২০ জনের বক্তব্য নথিভুক্ত করেছেন।
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত্যুর আধ ঘণ্টা আগে অভিজিতের ফেসবুক লাইভ ছাড়াও ২ মে তাঁর উপরে হামলার এমন কিছু ভিডিয়ো ফুটেজ (সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি) মিলেছে, যাতে এলাকার কিছু বাসিন্দার ছবি আছে। অর্থাৎ অভিজিৎ-হত্যার অনেক প্রত্যক্ষদর্শী আছেন। সেই সব ‘সাক্ষী’র কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। অভিজিৎ-হত্যা এবং তাঁর মা ও দাদাকে মারধরের ঘটনায় তৃণমূলের স্থানীয় দুই নেতা-সহ অন্তত ৩০ জন জড়িত বলে সিবিআইয়ের অভিযোগ।
বীরভূমের কাঁকরতলা থানার নবসন গ্রামে বিজেপি কর্মী মিঠুন বাগদির হত্যাকাণ্ডে বুধবার সিউড়ি জেলা জেলে তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। খেজুরির মালদা গ্রামে এক মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত সংক্রান্ত নথি চেয়ে কাঁথি আদালতে আর্জি জানায় সিবিআই।
সিবিআইয়ের একটি দল সকালে বাঁকুড়ার ইন্দাসের নাড়রা গ্রামে গিয়ে ‘নিহত’ বিজেপি কর্মী অরূপ রুইদাসের (৩০) কাকা বাসুদেব, দিদি মমতা ও জামাইবাবু রামুর সঙ্গে কথা বলে। অন্য একটি দল কথা বলে রায়বাঘিনি গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘এখন সিবিআই আসায় হার্মাদেরা পালাচ্ছে, লুকোচ্ছে। আগামী কিছু দিনের মধ্যে এমন পরিবেশ হবে, মুরলীধর সেন লেনে বিজেপির দফতরের সামনে ২১-এর আগের মতো আবার লম্বা লাইন পড়বে।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, ‘‘এক সময় যাঁরা সিবিআই-কে ‘খাঁচাবন্দি তোতা’ বলতেন, তাঁদের এখন খুশি হওয়া উচিত! কারণ, তোতারা খাঁচা থেকে বেরিয়ে বীরভূমে, মেদিনীপুরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, তাতে তৃণমূল নেতারা বাড়ি থেকে গায়েব হয়ে যাচ্ছেন। মনে হচ্ছে, সিবিআই আর কয়েক দিন কাজ করলে ভোটের পরে বিজেপির যত কর্মী ঘরছাড়া হয়েছেন, তৃণমূলের ঘরছাড়ার সংখ্যা তার চেয়ে বেড়ে যাবে।’’ তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশে এই তদন্ত হচ্ছে। কিন্তু শুভেন্দুদের বক্তব্য শুনে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে যে, বিরোধীদের বিপদে ফেলতে বিজেপির প্রভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে সিবিআই-কে ব্যবহার করা হচ্ছে।’’