অনুব্রত মণ্ডল। ফাইল চিত্র।
গরু পাচার মামলায় অভিযুক্ত অনুব্রত মণ্ডলের দু’টি মোবাইল ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠাতে পারবে সিবিআই, বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিলেন আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। এ দিন অনুব্রতের দেহরক্ষী সেহগাল হোসেনকে এই মামলায় আরও ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। অনুব্রতকে আসানসোলের সংশোধনাগারে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। বোলপুরে অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তিন জনের বাড়িতে গিয়েও তথ্য সংগ্রহ করে সিবিআই।
অনুব্রত ওরফে কেষ্টর আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা এ দিন আদালতে তাঁর মক্কেলের দু’টি মোবাইল ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানোর আর্জির বিরোধিতা করেন। তাঁর দাবি, ১১ অগস্ট মোবাইল দু’টি বাজেয়াপ্ত করা হলেও ‘ডিজিটাল লক’ করা হয়নি। আদালতে জমাও দেওয়া হয়নি। এত দিন সিবিআই ফোন দু’টি নিজেদের কাছে রেখেছিল, যা ‘নিয়ম বহির্ভূত’। এই সময়ে অনুব্রতের বিরুদ্ধে চক্রান্ত হয়ে থাকতে পারে। সিবিআইয়ের আইনজীবী রাকেশ কুমারের পাল্টা দাবি, অনুব্রতকে গ্রেফতারের দিন তাঁর উপস্থিতিতে ফোন দু’টি ‘সিল’ করা হয়। বিচারক নির্দেশ দেন, মোবাইল দু’টি ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো যাবে। তবে ১১ অগস্ট থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোবাইলে তথ্য সংক্রান্ত গোলমাল হয়েছে কি না, তা ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের রিপোর্ট দিতে হবে।
এ দিন সিবিআইয়ের দুই আধিকারিক আসানসোলের বিশেষ সংশোধানাগারে অনুব্রতকে ঘণ্টাখানেক জিজ্ঞাসাবাদ করেন। সিবিআই সূত্রের দাবি, বুধবার বোলপুরে অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ রাজীব ভট্টচার্য ও মলয় পীটের কাছে যে সব তথ্য মিলেছে, তার ভিত্তিতে এই জিজ্ঞাসাবাদ। তবে অনুব্রত সদুত্তর দেননি। উল্টে দাবি করেছেন, কোথায় কী লেনদেন হয়েছে, তা তাঁর হিসাবরক্ষক বলতে পারবেন।
এ দিনই অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত বোলপুরের কালিকাপুরের তিন জনের বাড়িতে যায় সিবিআই। তাঁদের মধ্যে ঠিকাদার রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বাড়িতে ছিলেন না। সূত্রের দাবি, বাড়ির লোকজনের কাছে রবীন্দ্রনাথের সংস্থার লেনদেন নিয়ে খোঁজ করে সিবিআই। তদন্তকারীদের দাবি, সন্দীপ রায় নামে এক জনের কাছে ‘বাড়িপুকুর’ নামে একটি পুকুরের অংশ ও প্রাক্তন সেনাকর্মী সুজিত পাণ্ডের মুড়ি মিলের একটি জায়গা কিনেছিলেন অনুব্রত। এ দিন সে সব নিয়ে খোঁজ নেন তদন্তকারীরা। সেহগালকে আদালতে তোলা হলে আইনজীবী অনির্বাণ তাঁর জামিন এবং দ্রুত শুনানি শুরুর আর্জি জানান। জামিনের আর্জির বিরোধিতা করে সিবিআইয়ের আইনজীবী রাকেশ কুমারের দাবি, যে তথ্য জমা দেওয়া হয়েছে, তা অভিযুক্তের জেল হেফাজতের জন্য যথেষ্ট।