অনুব্রত মণ্ডল।
এক কালের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতার চোখে জল! সিবিআইয়ের গাড়িতে বসে নির্বাক অনুব্রত মণ্ডল কাঁদছেন! বৃহস্পতিবার রাতে এমন দৃশ্যই দেখা গেল।
কলকাতায় নিয়ে আসা হচ্ছে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়া তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে। বৃহস্পতিবার সকালে আটক হওয়া থেকে বিকেলে গ্রেফতার বা সন্ধ্যায় সিবিআইয়ের গাড়িতে কলকাতায় রওনা— এক বারের জন্যও তাঁকে কোনও কথা বলতে শোনা যায়নি। আদালতে বিচারকের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। সন্ধ্যায় তাঁকে নিয়ে সিবিআইয়ের গাড়ি কলকাতায় আসার পথে দাঁড়ায় পালসিটের কাছে একটি পেট্রল পাম্পে। তখনই সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা তাঁকে নানা প্রশ্ন করেন। কোনও জবাব দেননি অনুব্রত। হাত নেড়ে বুঝিয়ে দেন তাঁর কিছু বলার নেই। তবে দেখা যায়, তাঁর চোখ চিক চিক করছে। কাঁদছেন অনুব্রত!
বোলপুরের বাড়ি থেকে আটক করার পর বৃহস্পতিবার বিকেলে অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করে সিবিআই। এর পর আদালত। সেখানে তিন ঘণ্টা কোর্ট রুমে চলেছে শুনানি। কাঁকসার অতিথিশালায় শারীরিক পরীক্ষাও হয় তাঁর। রাত সওয়া ৭টা নাগাদ অনুব্রতকে কলকাতায় নিয়ে আসার জন্য সিবিআইয়ের কনভয়ে তোলা হয়। এই গোটা প্রক্রিয়া চলাকালীন দিনভর বীরভূমের দাপুটে নেতার কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
আদালত চত্বরে এমনকি, বোলপুরে তাঁর বাড়ির কাছে ‘গরু চোর’ স্লোগান শুনেও অনুব্রত ছিলেন নির্লিপ্ত। তবে রাতে কলকাতায় আসার পথে যে অনুব্রতকে দেখা গেল, তিনি ‘বিধ্বস্ত’। আসানসোল থেকে কলকাতায় আসার পথে পালসিটের একটি পেট্রেল পাম্পে থেমেছিল অনুব্রতের গাড়ি। ধেয়ে আসে একের পর এক প্রশ্নও। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিনি কেমন আছেন? কিছু বলতে চান কি না! যদিও সেই প্রশ্নের কোনও জবাব আসেনি তৃণমূল নেতার তরফে। পরে ক্যামেরা তাঁর মুখের কাছাকাছি আনা হলে দেখা যায় চোখের কোনে সামান্য জল বীরভূমের দাপুটে নেতার।
গাড়িতে তাঁর পাশে বসেছিলেন এক সিবিআই আধিকারিক। তাঁর সঙ্গে দু’-একবার বাক্যবিনিময় করতে দেখা গেলেও সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে চুপ থাকলেন এক কালের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রত। মাথায় হাত দিয়ে ছলছল চোখে বসে রয়েছেন গোয়েন্দাদের পাশে।