প্রতীকী ছবি
নীল আলো জ্বালিয়ে তির বেগে ছুটছে অ্যাম্বুল্যান্স। সঙ্কটাপন্ন রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতেই এ ভাবেই ছোটে অ্যাম্বুল্যান্স। কিন্তু যে দিকে ছুটছে, সে দিকে হাসপাতাল কোথায়? কিছুটা এগোলেই তো বিস্তীর্ণ ধান খেত, তার পরেই বাংলাদেশ সীমান্ত। কাঁটাতারের বেড়া নেই এদিককার সীমান্তে। অ্যাম্বুল্যান্সের এই উল্টো গতি দেখেই সন্ধ্যেবেলায় পুলিশ দাঁড় করায় সেটিকে। ভিতরে উঁকি দিতেই চমকে ওঠেন পুলিশকর্মীরা। রোগী কোথায়, অন্ধকারে জোড়া চোখ জ্বলজ্বল করছে। টর্চের আলো ফেলতে দেখা যায়, দু’টি গরুকে রাখা হয়েছে সেখানে। পুলিশের দাবি, পাচারকারীরা গরু দুটোকে নিয়ে সীমান্তবর্তী কোনও এলাকায় রাখত। রাত বেশি হলে তাড়িয়ে ওপারে পাঠিয়ে দিত। এই মাসের ১০ তারিখ জলপাইগুড়ির সাতকুড়া গ্রামের ঘটনা। এর পরেই প্রশ্ন উঠেছে, লকডাউনের পরে কি আবার পাচার বাড়তে শুরু করেছে?
সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের ব্যবসায়ী এনামুল হক এবং বিএসএফের প্রাক্তন কমান্ডান্ট সতীশ কুমারের ব্যাপারে সিবিআই তদন্ত শুরু করেছে। সতীশ কুমার এক সময়ে জলপাইগুড়িরই রাধাবাড়ি ক্যাম্পে ছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হওয়ার মধ্যেই নতুন করে উত্তরবঙ্গের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে গরু পাচার ধরতে তৎপরতা বাড়ছে বলে খবর। পুলিশ সূত্রে দাবি, লকডাউনের ফলে পাচার কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আনলকের মধ্যে ফের একটু একটু করে সক্রিয় হচ্ছে পাচারকারীরা। ১০ সেপ্টেম্বর সাতকুড়া গ্রামের ঘটনা তারই উদাহরণ।
সে দিন চালককে ধরতে না পারলেও এক যুবককে পাকড়াও করেছে পুলিশ। তদন্তে তারা জানতে পেরেছে, যত শীত এগিয়ে আসবে পাচার ততই বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। ধৃতকে জেরা করে যা জানা গিয়েছে, সবই বিএসএফকে জানিয়েছে পুলিশ। সেই তথ্যের সূত্র ধরে জলপাইগুড়ির নগর বেরুবাড়ি এবং রাজগঞ্জের সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে বিএসএফ সূত্রে খবর। একই সঙ্গে সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে, নজরদারি শিথিল করার কোনও প্রশ্নই নেই। জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সন্দীপ মণ্ডল বলেন, “গুরুত্ব দিয়েই তদন্ত চলছে। তদন্তে কী উঠে আসছে, তা সংবাদমাধ্যমে এখনই বলা যাবে না।”