জলযানের সঙ্গে বাংলাদেশি বার্জের ধাক্কা লাগার পরে।—ফাইল চিত্র।
ভুল চ্যানেল ধরে বাংলাদেশি বার্জটি যাচ্ছিল বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার গঙ্গায় বন্দরের জলযানের ধাক্কায় সেই বার্জের দুর্ঘটনার জন্য কলকাতা বন্দরের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে তলিয়ে যাওয়া বার্জটির মালিক সংস্থা। পুলিশি সূত্রের খবর, বাংলাদেশি সংস্থার কলকাতার এজেন্ট পশ্চিম বন্দর থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। পুলিশ মামলা রুজু করার আগে প্রাথমিক ভাবে অভিযোগ খতিয়ে দেখছে। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দু’পক্ষের সঙ্গে কথাও বলবেন পুলিশ আধিকারিকেরা।
‘মা মমতাময়ী’ নামে ছাইবোঝাই বাংলাদেশি বার্জটি বৃহস্পতিবার সকালে মহেশতলার কাছে উলুডাঙায় ‘ডিভি রবীন্দ্র’ নামে কলকাতা বন্দরের একটি জলযানের ধাক্কায় ডুবে যায়। বন্দরের অভিযোগ, বার্জটি নিয়ম ভেঙে শিপিং চ্যানেলে ঢুকেছিল।
কলকাতা বন্দরের চেয়ারম্যান বিনীত কুমার শুক্রবার বলেন, ‘‘হুগলি নদীতে জাহাজ চলাচলের চ্যানেল নির্দিষ্ট করা আছে। ভিটিএমএস পদ্ধতিতে সেই চ্যানেলের মধ্য দিয়ে জাহাজ চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়। নাব্যতা নিয়ে বার্জটির সমস্যা ছিল। ফলে সেটির শিপিং চ্যানেলের ধার ঘেঁষে বা বাইরে দিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু বার্জটি নিয়ম ভেঙে শিপিং চ্যানেলের মাঝবরাবর যাচ্ছিল। তাতেই বিপত্তি ঘটে।’’ চেয়ারম্যান জানান, বন্দরের মেরিন বিভাগের অধিকর্তার নেতৃত্বে একটি কমিটি গড়া হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে সেই কমিটির রিপোর্ট জমা পড়বে। তখন বিশদ ভাবে জানা যাবে। বাংলাদেশি বার্জটির জ্বালানি তেল থেকে নদীতে যাতে দূষণ না-ছড়ায়, সেই জন্য তেল বার করে নেওয়া হয়েছে। তবে বার্জ সংস্থার তরফে পুলিশে অভিযোগ করার ব্যাপারে তাঁরা কিছুই জানেন না বলে জানান বন্দরের চেয়ারম্যান।
পুলিশি সূত্রের খবর, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বার্জের ১৩ জন নাবিকের ডাঙায় ওঠার অনুমতিপত্র নেই। তাঁদের নদীর উপরেই অন্য একটি বার্জে রাখা হয়েছে। এখনই বাংলাদেশে ফিরে যেতে বারণ করা হয়েছে তাঁদের। কারণ, ওই নাবিকদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ জানান, বার্জটি আপাতত নদীগর্ভেই রয়েছে। তবে তার জন্য শিপিং চ্যানেল অবরুদ্ধ হয়নি। জাহাজ মোটামুটি স্বাভাবিক ভাবেই চলাচল করছে। যেখানে বার্জটি ডুবেছে, সেই জায়গাটি ‘বয়া’ দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। বন্দরের বক্তব্য, ডুবে যাওয়া বার্জটি উদ্ধারের দায়িত্ব মালিক সংস্থারই।