Calcutta University

Calcutta University: বর্ষণে বিদ্যুৎ উধাও, সঙ্কটে বহু পরীক্ষার্থী

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের চূড়ান্ত সিমেস্টার এবং পুরনো নিয়মের তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২১ ০৬:২৩
Share:

ফাইল চিত্র।

নেটওয়ার্কের সমস্যা তো আছেই। তার উপরে কয়েক দিনের একটানা প্রবল বর্ষণে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছেন।

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের চূড়ান্ত সিমেস্টার এবং পুরনো নিয়মের তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার। অতিমারির দরুন এখন পড়ুয়ারা বাড়িতে বসেই পরীক্ষা দেন। কলেজের ওয়েবসাইট থেকে প্রশ্নপত্র ডাউনলোড করে নিয়ে উত্তর লেখেন। সেই উত্তরপত্র স্ক্যান করে ই-মেল অথবা কলেজের পোর্টালে আপলোড করতে হয়। এই পদ্ধতিতে না-পারলে ছাত্রছাত্রীরা কলেজে গিয়ে পরীক্ষার খাতা জমা দিতেও পারেন।

এই অবস্থায় অঝোরবর্ষণে বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গের ছাত্রছাত্রীরা পড়েছেন মহাসমস্যায়। ক্যানিং বঙ্কিম সর্দার কলেজের অধ্যক্ষ তিলক চট্টোপাধ্যায় এ দিন জানান, তাঁর কলেজের বহু পড়ুয়া সুন্দরবনের দুর্গম অঞ্চলে থাকেন। প্রবল বর্ষণে অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ ছিল না। ফলে শ্লথ হয়ে পড়ে ইন্টারনেটের গতি। উত্তর লিখবেন কি, প্রশ্নপত্র ডাউনলোড করতেই ঝামেলায় পড়ছেন তাঁরা। ছাত্রছাত্রীদের মোবাইল ফোনে চার্জ দেওয়ারও উপায় ছিল না। প্রত্যন্ত এলাকায় উত্তরপত্র আপলোডের ক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে পরীক্ষার্থীদের। গোটা বিষয়টি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ ও ক্যানিংয়ের মহকুমাশাসককে জানান।

Advertisement

ওই কলেজের এক ছাত্রী জানান, তিনি থাকেন গোসাবায়। বিদ্যুৎ চলে যাওয়াও মোবাইলে চার্জ দিতে পারছেন না। ইন্টারনেট পরিষেবাও ভাল নয়। সাইবার ক্যাফেতে গিয়ে খাতা জমা দিতে হলে নদী পেরিয়ে ক্যানিং যেতে হবে। এই আবহাওয়ায় নৌকা চলাচল অনিয়মিত। তিলকবাবু জানান, ধারাবর্ষণে গোসাবা অঞ্চল বিদ্যুৎহীন। আজ, শুক্রবার কী ভাবে পরীক্ষা হবে, উঠছে প্রশ্ন।

হাওড়া লালবাবা কলেজের অধ্যক্ষ সঞ্জয় কুমার জানান, তাঁর কলেজেও গ্রামাঞ্চলের অসংখ্য পড়ুয়া রয়েছেন। বিদ্যুৎ না-থাকায় মোবাইলে চার্জ দিতে পারেননি তাঁদের অনেকেই। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনলাইনে খাতা জমা দিতে প্রচণ্ড অসুবিধায় পড়েছেন তাঁরা। তিনিও বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। কাকদ্বীপ সুন্দরবন মহাবিদ্যালয়ের টিচার-ইনচার্জ প্রবীর দাস জানান, তাঁদের কলেজ ভবন জলমগ্ন। দুর্যোগের জন্য উত্তরপত্র আপলোড করতে পড়ুয়াদের অনেকেই সমস্যায় পড়ছেন।

নামখানা শিবানী মণ্ডল মহাবিদ্যালয়ে পড়তে আসেন সুন্দরবনের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বহু ছাত্রছাত্রী। কলেজের টিচার-ইনচার্জ দয়ালচাঁদ সর্দার এ দিন বলেন, ‘‘অনেক ছাত্রছাত্রী ফোন করে জানাচ্ছে, তাদের এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। ফোনে চার্জ দেওয়া যাচ্ছে না।’’ দক্ষিণের শেষ প্রান্তে মৌসুনি দ্বীপ থেকেও অনেকে পড়তে আসেন ওই কলেজে। সেখানকার পড়ুয়ারাও কর্তৃপক্ষকে জানান, তাঁরা রয়েছেন বিদ্যুৎহীন অবস্থায়। পরীক্ষার্থীদের একজোট হয়ে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন কলেজ-প্রধান। যাঁর মোবাইলে বেশি চার্জ থাকবে, তাঁর থেকেই বাকি পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র পাঠাতে বলেছেন তিনি।

করোনার দাপট শুরু হওয়ার পর থেকে অধিকাংশ পরীক্ষাই হচ্ছে অনলাইনে। অনেক ক্ষেত্রে কলেজ থেকে গাড়ি নিয়ে গিয়ে পড়ুয়াদের উত্তরপত্র সংগ্রহের ব্যবস্থা আছে। এ দিনেও সেই ভাবে উত্তরপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। দয়ালচাঁদবাবু জানান, মূল রাস্তা দিয়ে গাড়ি যায়। ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের এলাকায় রাস্তার ধারে এসে উত্তরপত্র জমা দিয়ে যাচ্ছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement