কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
বিচারপতির নামে পোস্টার দিয়ে এবং এজলাস অবরোধ করে বিক্ষোভের ‘বেনজির’ ঘটনা দেখেছিল কলকাতা হাই কোর্ট। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির সেই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলাও রুজু করেছিল হাই কোর্ট। তৈরি হয়েছিল বৃহত্তর ডিভিশন বেঞ্চ। বছর শেষ হতে চললেও এখনও সেই মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। আদালতের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, ৯ জুনের পর সেই মামলার শুনানিও আর হয়নি।
সোমবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে এক আইনজীবীর ‘আদালত অবমাননা’ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর পাশেই কার্যত দাঁড়িয়েছে হাই কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশন। অনেকের স্মৃতিতে ফের উস্কে উঠেছে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা সংক্রান্ত মামলাটি।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা রুজু করেছিল রাজ্য পুলিশ। তার বিরুদ্ধে শুভেন্দু হাই কোর্টে মামলা করলে তাঁকে রক্ষাকবচ দেন বিচারপতি মান্থা। ঘটনাচক্রে, তার পরেই বিচারপতির নামে পোস্টার পড়ে। হাই কোর্টে তাঁর এজলাস অবরোধ করেন এক দল আইনজীবী। দেশের প্রাচীনতম হাই কোর্টে এই ঘটনায় সে সময় অনেকেই বিস্মিত হয়েছিলেন। কোর্টের খবর, ওই মামলায় দু’টি অভিযোগ ছিল। এক, পোস্টার সাঁটানো এবং দুই, এজলাসে অবরোধ করা। পোস্টার সাঁটানোর ক্ষেত্রে পুলিশ ছ’জনের নাম কোর্টে জানিয়েছিল। তাঁদের মধ্যে পাঁচ জন একেবারেই দরিদ্র এবং টাকার বিনিময়ে পোস্টার সাঁটিয়েছিলেন। বাকি এক জন আইনজীবীর মুহুরি। পাঁচ জন ক্ষমাপ্রার্থনা করে মামলা থেকে ছাড় পেলেও ওই মুহুরিকে মামলায় অভিযুক্ত সাব্যস্ত করা হয় এবং তাঁর সূত্রেই ওই আইনজীবীর নামও মামলায় যুক্ত হয়। অন্য দিকে, এজলাস অবরোধ করার ঘটনায় ন’জন আইনজীবীকে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করা হয়েছিল। পোস্টার সাঁটানোয় অভিযুক্তদের নাম সামনে এলেও এজলাস অবরোধের ঘটনায় অভিযুক্তদের নাম প্রকাশ্যেই আসেনি।
হাই কোর্টের খবর, বিচারপতির এজলাস অবরোধ করায় যুক্ত আইনজীবীদের নাম প্রকাশ্যে এলে তাঁদের সম্মান নষ্ট হবে বলে জানিয়েছিল বার অ্যাসোসিয়েশন। সেই যুক্তি মেনেও নেয় বৃহত্তর বেঞ্চ। ৯ জুন মামলার শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চ শুধু জানিয়েছিল, ন’জনের মধ্যে এক জন সবার তরফে লিখিত ভাবে ক্ষমা চেয়েছেন। তার ভিত্তিতে ন’জনকেই ক্ষমা করে কোর্ট। তার পরে মামলাটির শুনানির কোনও তথ্য হাই কোর্টের ওয়েবসাইটে মেলেনি।