Kuntal Ghosh Letter Case

কুন্তলের চিঠির অভিযোগের তদন্তে কলকাতা পুলিশ থাকবে না, সিবিআইয়ের আপত্তিতে সায় হাই কোর্টের

নিয়োগ মামলায় গ্রেফতার তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুবনেতা কুন্তল। আদালতকে লেখা তাঁর চিঠি নিয়ে হাই কোর্টের পাশাপাশি মামলা চলছিল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতেও।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৭:৩০
Share:

—ফাইল চিত্র।

তদন্তের নামে শারীরিক নির্যাতন করেন ইডি-সিবিআই কর্তারা— কুন্তল ঘোষের চিঠির এই অভিযোগ নিয়ে আপাতত তদন্তে করতে পারবে না কলকাতা পুলিশ। এ ব্যাপারে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত (জাজ সিবিআই কোর্ট নম্বর ১ (ইনচার্জ) আলিপুর) যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা আপাতত নিষ্ক্রিয় করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত বলেছিল, কুন্তলের চিঠির যৌথ তদন্ত করবে সিবিআইয়ের জয়েন্ট ডিরেক্টর এবং কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের জয়েন্ট কমিশনার। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্ট জানিয়ে দিল, আপাতত ওই নির্দেশ কার্যকর করতে হবে না।

Advertisement

নিয়োগ মামলায় গ্রেফতার তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুবনেতা কুন্তল। আদালতকে লেখা তাঁর চিঠি নিয়ে হাই কোর্টের পাশাপাশি মামলা চলছিল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতেও। সেই মামলায় নিম্ন আদালতের নির্দেশ নিয়ে সিবিআইয়ের আপত্তির জেরেই এই নির্দেশ দেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহ।

সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক বলেছিলেন, কুন্তলের চিঠি মামলায় যৌথ তদন্তের রিপোর্ট আগামী ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জমা দিতে হবে কলকাতা পুলিশ এবং সিবিআইয়ের যৌথ তদন্তকারী দলকে। নিম্ন আদালতের সেই নির্দেশ নিয়ে আপত্তি তোলে সিবিআই। প্রথমে সরাসরি সিবিআই আদালতেই আপত্তির কথা জানিয়েছিল তারা। কিন্তু আদালত সেই আপত্তির কথা শোনেনি। বরং সিবিআইকে বলেছিল, নির্দেশ না মানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ নিয়ে আসুক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। যদি তা না পারে, তবে তদন্তের রিপোর্ট যথাসময়ে জমা দিতে হবে। নিম্ন আদালতের সেই বক্তব্যকে চ্যালেঞ্জ করেই হাই কোর্টে আসে সিবিআই।

Advertisement

বৃহস্পতিবার মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে বিচারপতি অমৃতা সিংহের বেঞ্চে। সিবিআই আদালতে যুক্তি দেয়, ‘‘যেখানে হাই কোর্টের নজরদারিতে তদন্ত চলছে, সেখানে নিম্ন আদালত কী ভাবে এই নির্দেশ দিতে পারে?’’ শুধু তা-ই নয়, সিবিআই বলে, ‘‘গত ২১ অগস্ট বিচারাধীন বন্দিকে চেম্বারে হাজিরা করানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক। বিচারকের কি এই এক্তিয়ার রয়েছে? কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বক্তব্য না শুনেই কী করে এমন নির্দেশ দিতে পারে নিম্ন আদালত?’’ হাই কোর্টের কাছে সিবিআই জানতে চায়, ‘‘নিম্ন আদালত কোনও সাংবিধানিক কোর্ট নয়। তারা কী ভাবে ওই রিপোর্ট চাইতে পারে?’’ সিবিআইয়ের এই যুক্তি শোনার পরই নিম্ন আদালতের নির্দেশকে নিষ্ক্রিয় করে দেন বিচারপতি। সিবিআইকে বলা হয়, সিবিআই আদালতের নির্দেশ আপাতত কার্যকর করতে হবে না। বিচারপতি বলেন, ‘‘নিম্ন আদালতের নির্দেশ নিষ্ক্রিয় করা হল।’’

প্রসঙ্গত, নিয়োগ মামলায় এখন প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি কুন্তল। তিনি নিম্ন আদালতে চিঠি দিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তদন্তকারী দুই সংস্থা ইডি এবং সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে। সূত্রের খবর, চিঠিতে কুন্তল শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ এনেছিলেন ইডির দুই তদন্তকারী অফিসার এবং সিবিআইয়ের একজন অফিসারের বিরুদ্ধে। সেই চিঠি প্রথমে আদালতে জমা পড়ে তার পর সেই চিঠির ভিত্তিতে অভিযোগ দায়ের হয় কলকাতার হেয়ার স্ট্রিটের থানাতেও। মামলা যায় হাই কোর্ট এমনকি, সুপ্রিম কোর্টেও। এই মামলার সূত্রেই সুপ্রিম কোর্ট কুন্তলের চিঠি সংক্রান্ত মামলার শুনানি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছিল। তা ফিরে এসেছিল বিচারপতি সিংহের বেঞ্চে। বৃহস্পতিবার সেই বেঞ্চেরই দ্বারস্থ হয়েছিল সিবিআই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement