Calcutta High Court

বাংলাদেশিদের সঙ্গে মিলনে বাধ্য করেন স্বামী! হাওড়ার বধূর মামলায় পুলিশকে ভর্ৎসনা কোর্টের

স্বামীর বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন হাওড়ার বধূ। অভিযোগ, অন্য পুরুষের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে তাঁকে বাধ্য করেছেন তাঁর স্বামী।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ ২১:৪১
Share:

মহিলাকে হেনস্থার মামলায় পুলিশের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট কলকাতা হাই কোর্ট। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

অন্য পুরুষের সঙ্গে যৌন মিলনে স্ত্রীকে বাধ্য করেন স্বামী! এমনই অভিযোগ নিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন মহিলা। সেই মামলায় রাজ্য পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। মামলাটি সাইবার ক্রাইম বিভাগে পাঠিয়ে দিয়েছে আদালত। অভিযুক্তের ফোনের মুছে ফেলা তথ্য উদ্ধার করে উপযুক্ত অনুসন্ধানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

স্বামীর বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলে আদালতে যান দক্ষিণ ২৪ পরগনার ওই মহিলা। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই স্ত্রীকে নানা অসামাজিক কাজে বাধ্য করতেন যুবক। স্ত্রীর নগ্ন ছবি তোলা থেকে শুরু করে শারীরিক সম্পর্কের ভিডিয়ো রেকর্ড, স্ত্রীর সম্মতি ছাড়াই সে সব কাজ করতেন। পাশাপাশি, চলত নানা অত্যাচার। যুবক পেশায় দর্জি। আয় সামান্য হলেও ঘুরপথে তাঁর প্রতিপত্তি বাড়তে শুরু করে। অভিযোগ, স্ত্রীর অশ্লীল ভিডিয়ো করে বাংলাদেশের কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে পাঠাতেন তিনি। বাংলাদেশে তাঁর নিয়মিত যাতায়াতও ছিল। সেখান থেকে টাকা নিয়ে আসতেন। মহিলার আইনজীবী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতে জানিয়েছেন, বাংলাদেশিদের বাড়িতে ডেকে আনতেন অভিযুক্ত। নিজের স্ত্রীকে বাধ্য করতেন তাঁদের সঙ্গে মিলনে। একাধিক বার এই ঘটনার পর অবশেষে আইনের সাহায্য নেন মহিলা।

পুলিশের কাছে গিয়েও লাভ হয়নি। অভিযোগ, বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা না করে লঘু ধারায় মামলা রুজু করেছিল পুলিশ। যা শুনে বিচারপতি ঘোষ বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। পুলিশের কেস ডায়েরি এবং তদন্তের রিপোর্ট তলব করেছিলেন তিনি। সাঁকরাইল থানার পুলিশ আদালতে তা জমা দেয়। রাজ্যের আইনজীবী জানান, প্রাথমিক তদন্তে মহিলার অভিযোগের কোনও প্রমাণ পায়নি পুলিশ। চিকিৎসার প্রয়োজনে কয়েক জন বাংলাদেশি এসেছিলেন। অভিযুক্ত তাঁদের চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে সহায়তা করেন। কিন্তু মহিলার আইনজীবী পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন। অভিযোগ, মহিলা থানায় অভিযোগ দায়ের করার এক মাস পর পুলিশ পদক্ষেপ করে। বাজেয়াপ্ত করা হয় অভিযুক্তের মোবাইল ফোন। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে তিনি মোবাইল থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মুছে ফেলতে সক্ষম হয়েছেন। এর পরেই পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি ঘোষ। তিনি বাজেয়াপ্ত করা মোবাইলটি রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডির সাইবার অপরাধ বিভাগে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ এই ঘটনার সঠিক তদন্ত করতে পারছে না বলেও তিনি জানান। বিচারপতি ঘোষের নির্দেশ, মোবাইল থেকে মুছে ফেলা তথ্য উদ্ধার করে, তা সঠিক ভাবে যাচাই করে সাইবার অপরাধ বিভাগকে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। ওই বিভাগকেই তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে বলেছেন বিচারপতি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement