West Bengal Panchayat Election 2023

‘কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে নির্দেশ মানেনি রাজ্য ও কমিশন’, ক্ষুব্ধ হাই কোর্ট তলব করল রিপোর্ট

বুধবার বিএসএফের আইজির তরফে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে রিপোর্ট জমা দেন কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৩ ১৮:২২
Share:

পঞ্চায়েত ভোটে বাহিনী মোতায়েন নিয়ে কমিশন এবং রাজ্যের রিপোর্ট তলব কলকাতা হাই কোর্টের। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক ‘হিংসা’র ঘটনায় কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে রিপোর্ট জমা দিলেন পশ্চিমবঙ্গ সেক্টরের বিএসএফ আইজি তথা কেন্দ্রীয় বাহিনীর নোডাল অফিসার এস সি বুদাকোটি। বুধবার বিএসএফের আইজির তরফে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে রিপোর্ট জমা দেন কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল (এএসজি) অশোককুমার চক্রবর্তী।

Advertisement

পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এবং কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরীর (ডালু) আদালত অবমাননার মামলার শুনানিতে বুধবার বিএসএফের আইজি যে রিপোর্ট দিয়েছেন, তা নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্যকে আগামী ২৪ জুলাইয়ের মধ্যে জবাব দিতে হবে বলে জানিয়েছে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী ২৬ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা ঠেকাতে হাই কোর্টের নির্দেশ ছিল, মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, বিএসএফ আইজি, ডিজি, এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) বসে বাহিনী মোতায়েন নিয়ে বৈঠক করবেন। কোথায় কোথায় বাহিনী থাকবে সিদ্ধান্ত নেবেন। জেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় থানাকে সহযোগিতা করতে হবে। বুধবার শুনানি পর্বে এএসজি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে সঠিক সময়ে সহযোগিতা করেনি কমিশন। ভোটের দিন স্পর্শকাতর এলাকায় বাহিনী মোতায়েন করা হয়নি। পরিকল্পনা না থাকায় অন্যত্র বাহিনী চলে যায়।’’

Advertisement

প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম সে সময় বলেন, ‘‘রিপোর্ট দেখে ঠিক বলেই মনে হচ্ছে। দূর থেকে বাহিনী এসেও বসে ছিল। কমিশনের উচিত ছিল সততার সঙ্গে কাজ করা। আপনি যদি আদালতের নির্দেশ গ্রহণ করে নেন, তবে তা কার্যকর করতে হবে। না হলে চ্যালেঞ্জ করতে পারতেন। খুবই দুঃখের বিষয় এত ক্ষতি হয়ে গেল। রিপোর্ট সত্যি হলে বলতে হবে নির্দেশ ইচ্ছাকৃত ভাবে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করা হয়েছে।’’

এর পরেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘কী ভাবে আপনাদের ভূমিকা ব্যাখ্যা করব তা বুঝতে পারছি না। আপনাদের কোনও কাজে আদালত হস্তক্ষেপ করেনি। আপনারা যা যা বলেছেন সব মেনে নিয়েছি। শুধু কেন্দ্রীয় বাহিনীর নির্দেশ দিয়েছিলাম। একটা ছাতা দিয়েছিলাম। সেই ছাতাও কারও সঙ্গে শেয়ার করেননি।’’

আদালতের নির্দেশ মতো এখনও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়নি কেন, তা জানার জন্য রাজ্যের মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিতে হাই কোর্টের কাছে আবেদন জানান এসএসজি। তার প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘রাজ্য পুলিশের ডিজি, এসপি কেউ নির্দেশ পালন না করলে মুশকিল। আমি কলকাতার রাস্তাঘাট চিনি না। আমার চালক আমাকে এখানে নিয়ে এসেছেন। এটা তাঁর কাজ। কিন্তু চিংড়িঘাটা আমি চিনি। যেখানে আমি চিনি না সেখানে তো সহযোগিতা করা উচিত। মোতায়েনের (কেন্দ্রীয় বাহিনী) পরিকল্পনা ঠিক ছিল না, এটা পরিষ্কার।’’

পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘‘আপনারাও সহযোগিতা করেননি। কমিশনও করেনি। তাই আমাদেরও আমাদের কাজ করা উচিত।” আদালতের আগের নির্দেশ মতো আরও ১০ দিন রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। এই পরিস্থিতিতে হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্য সরকারের অস্বস্তি বাড়ালো বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement