সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। — ফাইল চিত্র।
সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’র চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্ত রিপোর্ট চাইল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের নির্দেশ, আগামী ৫ জানুয়ারির মধ্যে ‘কাকু’র রিপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে। রিপোর্ট দিতে হবে এসএসকেএম হাসপাতালের সুপারকে। যদিও ইডি জানিয়েছে, ওই রিপোর্টে তাদের ভরসা নেই। হাই কোর্ট জানাল, আগে রিপোর্ট পেয়ে তার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত সুজয়কৃষ্ণ এখন এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি। ওই হাসপাতালে ‘কাকু’র চিকিৎসা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে ইডি। আদালতে ইডি মঙ্গলবার জানিয়েছে, ওই হাসপাতালের উপর কোনও বিশ্বাস নেই। এসএসকেএম হাসপাতালের সুপার তথা চিকিৎসক পীযূষকুমার রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে অভিযোগও তুলেছে ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী ফিরোজ এডুলজির সওয়াল, পীযূষকুমার মেডিক্যাল রিপোর্টে কারচুপি করছেন। এ বিষয়ে এসএসকেএমের সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। তবে তিনি ফোন ধরেননি।
মঙ্গলবার ইডির তরফে আরও বলা হয়, ‘‘আমরা ভিডিয়ো দেখাব, কী ভাবে এসএসকেএম হাসপাতালে স্বচ্ছন্দে রয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। তিনি আরামে করছেন। সামান্য মানসিক চাপ ছাড়া কোনও সমস্যা নেই।’’ ইডি এই প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের কথাও তুলে ধরেছে। জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, বাইপাস অস্ত্রোপচার বড় ধরনের কোনও অস্ত্রোপচার নয়। শীর্ষ আদালতের মতে অ্যাপেনডিক্সের মতোই অস্ত্রোপচার।
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩১ মে সুজয় গ্রেফতার হন। ২৭ জুন থেকে ১৬ জুলাই প্যারোলে মুক্ত ছিলেন তিনি। ১৭ জুলাই আবার এসএসকেএমে ভর্তি হন। সেই থেকে তিনি ওই হাসপাতালে। অন্তর্বর্তী জামিনের দাবিতে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। ইডি সেই জামিনের বিরোধিতা করে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা কেন জামিনের বিরোধিতা করছে, রিপোর্ট চায় হাই কোর্ট। ইডি সেই রিপোর্ট জমা দেয় মঙ্গলবার। কী কী বিষয়ে তাদের আপত্তি, তা জানায়। ইডির অভিযোগ, এসএসকেএমের সুপার কারচুপি করছেন। তারা এও বলে, তদন্তের খাতিরে কণ্ঠস্বরের নমুনা প্রয়োজন। কিন্তু নিতে পারেনি। আদালত প্রশ্ন তোলে, চার মাসে সেই নমুনা কেন নেওয়া যায়নি। এর পরেই হাসপাতালের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠায় হাই কোর্ট। ইডি জানায়, এসএসকেএমের রিপোর্টকে তারা বিশ্বাস করে না। ইএসআই হাসপাতালে তারা পাল্টা পরীক্ষা করাতে চায়। হাই কোর্ট বলে, ‘‘আগে এসএসকেএমের রিপোর্ট পাই। কী বলে দেখি। তার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাব।’’ এই মামলার পরবর্তী শুনানি ৫ জানুয়ারি।