রসিকা জৈন হত্যাকাণ্ডের মামলায় পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করল কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল ছবি।
তথ্য জানার অধিকার আইনে কোনও ব্যক্তির গোপন তথ্য দেওয়া যাবে না। রসিকা জৈন হত্যাকাণ্ডের মামলায় পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করে এমনটাই বলল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের একক বেঞ্চের নির্দেশ, হোয়াটসঅ্যাপে রসিকার পাঠানো কোনও বার্তা, ছবি-সহ চ্যাট কাউকে দেওয়া যাবে না। নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য, গোপনীয়তা রক্ষা করার দায়িত্ব পালন করতে হবে পুলিশকে।
রসিকার মৃত্যুর পর শ্বশুরবাড়ির পক্ষে অভিযোগ করা হয়, অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্ক ছিল তাঁর। এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে তথ্য জানার অধিকার আইনে রসিকা এবং তাঁর বন্ধুর মোবাইলের তথ্য সংগ্রহ করার জন্য আবেদন করা হয়। অভিযোগ, এই হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত হিসেবে জড়িত এক ব্যক্তি এই আবেদন করেন। তার ভিত্তিতে কালীঘাট থানা রসিকার বন্ধুকে ডেকে মোবাইল বাজেয়াপ্ত করে। সেখান থেকে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করা হয় বলেও অভিযোগ ওঠে।
পুলিশের এই ভূমিকার বিরুদ্ধে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় রসিকার পরিবার। তথ্য জানার অধিকার আইনে ব্যক্তিগত তথ্য নেওয়া যায় কি না, তা তারা উচ্চ আদালতের কাছে জানতে চায়। আদালতে তার পরিবারের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সওয়াল, ‘‘তথ্য জানার অধিকার আইনে এ ভাবে কি ব্যক্তিগত তথ্য জানা যায়? যদি তা সম্ভব হয়, তবে তো যে কোনও ব্যক্তির সম্মানহানির আশঙ্কা থাকবে।’’
হাই কোর্ট এই যুক্তিকে মান্যতা দেয়। বিচারপতি ভট্টাচার্যের নির্দেশ, ব্যক্তিগত কোনও তথ্য, চ্যাট, ছবি কাউকে দেওয়া যাবে না। এমন কিছু প্রকাশ করা যাবে না যাতে রসিকার সম্মানহানি হয়। কল্যাণ দাবি করে বলেন, ‘‘আদালতের এই রায় সারা দেশের মধ্যে দৃষ্টান্ত তৈরি করবে। কোনও অভিযোগের ভিত্তিতে কারও ব্যক্তিগত তথ্য যে জনসমক্ষে আনা যায় না, এই রায় তা নিশ্চিত করল।’’