Release of Rapists

যৌনক্ষমতা আছে কি নেই তার ভিত্তিতে গণধর্ষকদের মুক্তি আটকে থাকতে পারে না: কলকাতা হাই কোর্ট

বারুইপুর সংশোধনাগারে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুই বন্দি মুক্তি চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। ২২ বছর ধরে তাঁরা জেল খাটছেন। দু’বার তাঁদের মুক্তির আবেদন নাকচ হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৩ ১৯:০২
Share:

কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।

যৌনক্ষমতা আছে কি না, বন্দিদশা থেকে ধর্ষকের মুক্তির ক্ষেত্রে তা বিবেচ্য হতে পারে না। সম্প্রতি একটি মামলায় এমনটাই মন্তব্য করল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের বেঞ্চ জানিয়েছে, যে ধর্ষকেরা মুক্তির আবেদন জানিয়েছেন, তাঁরা জেলে কী ধরনের আচরণ করেছিলেন, শুধুমাত্র সেটাই বিবেচনা করে দেখতে হবে। জেলে আচরণের ভিত্তিতে তাঁরা মুক্তি পাওয়ার যোগ্য কি না, তা দেখতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। জেলে যাওয়ার আগে তাঁরা কী অপরাধ করেছিলেন, বর্তমানে তাঁরা যৌন ভাবে সক্ষম কি না, এ সব বিবেচনা করা যাবে না।

Advertisement

বারুইপুর সংশোধনাগারে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুই বন্দি মুক্তি চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। দু’জনেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা। তাঁদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত। গত ২২ বছর ধরে তাঁরা ওই অপরাধের জন্য জেল খাটছেন। এর আগে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে দু’বার মুক্তির আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু আবেদন নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। তার পরেই উচ্চ আদালতে যান বন্দিরা।

রাজ্যের সাজা পুনর্বিবেচনা পর্ষদের (স্টেট সেনটেন্স রিভিউ বোর্ড) কাছে মুক্তির আবেদন জানিয়েছিলেন দুই ধর্ষক। প্রথমে ২০২২ সালের ২ সেপ্টেম্বর এবং পরে ২০২৩ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তাঁদের আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়। পর্ষদের যুক্তি ছিল, ওই বন্দিদের অপরাধ অত্যন্ত ঘৃণ্য। তা ছাড়া, তাঁরা দু’জনেই এখনও যৌন ভাবে সক্ষম। তাই তাঁদের মুক্তি দেওয়া সম্ভব নয়।

Advertisement

আদালতে ওই বন্দিদের হয়ে মামলা লড়েন আইনজীবী উদয়শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় এবং দিবাকর সর্দার। এ প্রসঙ্গে বিচারপতি ভট্টাচার্যের পর্যবেক্ষণ, যে জঘন্য অপরাধ তাঁরা করেছেন, তার ভিত্তিতেই তাঁদের সাজা দেওয়া হয়েছিল। সংশোধনাগারের উদ্দেশ্য আসলে অপরাধীদের মানসিকতার সংশোধন। তাই আগের অপরাধের ঘৃণ্যতা এই মুক্তির আবেদনের ক্ষেত্রে বিচার্য হতে পারে না। ধর্ষকের যৌনক্ষমতা আছে কি না, তা-ও এ ক্ষেত্রে বিবেচ্য নয়। ওই ধর্ষক জেলে কেমন আচরণ করেছেন, তাঁর মধ্যে কোনও পরিবর্তন এসেছে কি না, তা বিচার করে দেখতে হবে। তার ভিত্তিতে মুক্তি দেওয়া হবে কি না, সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, দক্ষিণ ২৪ পরগনার এই গণধর্ষণের ঘটনায় মোট তিন জন সাজা পেয়েছিলেন। আর এক আসামি সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পেয়ে গিয়েছেন। বাকি দু’জন মুক্তির আবেদন নিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement